
Home বিজ্ঞানী / Scientist > ড. এম শমশের আলী / D. M. Shamsher Ali (1937)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 100756 বার পড়া হয়েছে
ড. এম শমশের আলী / D. M. Shamsher Ali (1937)
পারিবা
রিক পরিচিতি:
আন্তজার্তিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমানু বিজ্ঞানী ড. এম শমশের আলী (শান্তি) যশোরের কৃতি সন্তান। ১৯৩৭ সালের ২১ নভেম্বর পিতার কর্মস্থল কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারাতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পৈত্রিক সূত্রে তিনি যশোর সদর থানার সিঙ্গিয়া গ্রামের (বসুন্দিয়া) বাসিন্দা। পিতা মরহুম আমীর আলী রেলওয়ের চীফ কর্মাশিয়াল অফিসার ছিলেন। মা রহিমা খাতুন ছিলেন একজন গৃহিণী। পিতা-মাতার ১২ সন্তানের মধ্যে ড. শমশের আলী ৪র্থ এবং ভাইদের মধ্যে তৃতীয়। বড় ভাই, মেজ ভাই ও ফুল ভাই ইন্তেকাল করেছেন। মেজ ভাই ইস্পাহানির ম্যানেজার ছিলেন। অন্যান্য ভাই’রা চাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্য করেন।
বাল্যজীবন:
ড. শমশের আলীর বাল্যজীবন কাটে চুয়াডাঙ্গায়, পশ্চিমবঙ্গের রানাঘাটে ও যশোরে। চুয়াডাঙ্গাতে অবস্থানকালে রেলস্টেশনে উপমহাদেশের কিছু বরেণ্য ব্যক্তিকে দেখার সুযোগ পান। তাদের মধ্যে রয়েছেন মহাত্না গান্ধী, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও অরুনা আশরাফ আলী। তাঁর মনে পড়ে চুয়াডাঙ্গাতে একবার জার্মান ফুটবল টিম এসেছিল। জার্মান টিম এখানে খেলতে আসবে এটা ছিল সেই সময়ের জন্য একটা দারুন আনন্দের বিষয়। রেলস্টেশনের কাছে তখন সার্কাস হওয়ার ঘটনা এখনও তাঁর মন থেকে মুছে যায়নি। যখন সন্ধ্যা হতো তখন তিনি স্টেশনের ব্রীজের উপর পা ঝুলিয়ে বসে থাকতেন আর দেখতেন অনেক দূর হতে মহিষ আখের গাড়ী টেনে নিয়ে আসছে। পড়ন্ত বেলায় সূর্যের লালচে আভার সাথে সেই মহিষের পায়ের ধূলা মিশে যেন এক অপরূপ দৃর্শ্যের সৃষ্টি হতো। এসব স্মৃতি এখনও তাঁর মনে গভীরভাবে দাগ কাটে।
শিক্ষাজীবন:
জনাব শমশের আলীর শিক্ষাজীবন শুরু হয় চুয়াডাঙ্গাতে ইউসুফ মাস্টারের পাঠশালাতে। এখান থেকে মূলত তাঁর গনিতের ভিত্তি তৈরী হয়। ১৯৪৬ সালে চাকুরিজীবি পিতা চুয়াডাঙ্গা হতে বদলী হয়ে সপরিবারে চব্বিশ পরগনার রানাঘাটে চলে যান। সেখানকার বিখ্যাত লালগোপাল স্কুলে তাঁকে ভর্তি করা হয়। দুই বছর সেখানে লেখাপড়া করার পর ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর ১৯৪৮ সালে পিতা সপরিবারে নিজ জেলা যশোরে চলে আসেন। শহরের ষষ্টিতলা পাড়াতে একটি বাসা ভাড়া করে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। ১৯৪৮ সালে যশোর জিলা স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে শমশের আলী’কে ভর্তি করা হয়। ১৯৫৪ সালে এই স্কুল হতে তিনি কৃতিত্বের সাথে ম্যট্রিক পাশ করেন।
জিলা স্কুলে (Jessore Zilla School) পড়াকালীন যাদের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক মরহুম প্রফেসর মোঃ শরীফ হোসেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমান, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও গীতিকার মরহুম ড. মোঃ মনিরুজ্জামান প্রমুখ। স্কুলজীবনে তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি স্কাউটিং-এর মত বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকতেন। ছাত্র হিসেবে জনাব আলী ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। বরাবরই ক্লাসে তিনি প্রথম স্থান অধিকার করতেন। পরীক্ষার খাতায় শিক্ষকেরা একেবারেই লাল কালির দাগ দিতে পারতেন না। এই কারণে তিনি ছিলেন স্কুলের শিক্ষকদের কাছে অত্যন্ত স্নেহভাজন। জীবনে কখনও শিক্ষকের হাতে মার খেতে হয়নি। এখনও তিনি যেসব শিক্ষকের কথা স্মরণ করেন তাদের মধ্যে অন্যতম মরহুম আব্দুর রউফ, আনোয়ার হোসেন, আশরাফ হোসেন প্রমুখ।
ইংরেজির প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল একটু বেশী। বাবার ইচ্ছা ছিল গনিত ও ইংরেজিতে ডবল অনার্স নিয়ে ছেলে জুডিশিয়াল লাইনে যাবে। কিন্তু বাবার কথা তিনি রাখতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ফিজিক্স নিয়ে লেখাপড়া করেন। কিন্তু গনিত ও ইংরেজির উপর তাঁর বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। যশোর জিলা স্কুলে থাকাকালিন এর ভিত্তি তৈরী হয়।
যশোর জিলা স্কুলের পুরাতন আকৃতিটির ভবনটি ভেঙ্গে নতুন ভবন করায় তাঁর মনে এটা পীড়া দেয়। সেই চমৎকার আকৃতিটি তাঁর মনে এখনও গেঁথে আছে। এটা ভেঙ্গে ফেলার সময় যশোরে বসবাসরত প্রাক্তন ছাত্ররা এটাকে কেন যে বাঁধা দিল না তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। তিনি মনে করেন ইঞ্জিনিয়ারকে দিয়ে সেই আকৃতিটি আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব। জিলা স্কুলের এক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ সকল গণ্যমান্য ব্যক্তিকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে তিনি অনুরোধ করেছিলেন।
স্কুলজীবন শেষ করে ১৯৫৪ সালে রাজশাহী কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৬ সালে তিনি এই কলেজ হতে আই. এস. সি. পাশ করেন। যশোর জিলা স্কুলের মত রাজশাহী কলেজও তাঁর স্মৃতিতে গেঁথে আছে। সন্ধ্যা বেলায় পদ্মা নদীর পাড়ে বেঞ্চে বসে পা ঝুলিয়ে বাদাম খাওয়া আর বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারার মধ্যদিয়ে এক মধুর সময় কেটেছে সেখানে। শিক্ষক ছাত্রদের মধ্যে ছিল একটা অন্তরঙ্গ মেলা মেশা যেটা এখন আর দেখা যায় না। পরবর্তীকালে কর্মজীবনে প্রবেশের পর তিনি রাজশাহী কলেজকে বিজ্ঞানের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দিয়ে সাহায্য করেছেন।
১৯৫৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিজিক্সে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সালে তিনি পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে কৃতিত্ত্বের সাথে এখান থেকে অনার্স এবং ১৯৬০ সালে এম. এস. সি ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৬১ সালে যুক্তরাজ্যের Manchester University তে পি. এইচ. ডি করতে যান এবং ১৯৬৫ সালে সেখান থেকে Theoretical Nuclear Physics এ পি. এইচ. ডি ডিগ্রী লাভ করে দেশে ফিরে আসেন। উল্লেখ্য যে, স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সকল পর্যায়ের পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে তিনি অসাধারণ কৃতিত্বের সাথে উর্ত্তীর্ণ হন।
পেশাগত জীবন:
পাকিস্তান আনবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. আই এইচ ওসমানী কর্তৃক ১৯৬১ সালে ড. শমশের আলীকে আনবিক শক্তি কমিশনে সান্টিফিক অফিসার পদে নিয়োগদানের মধ্যদিয়ে তাঁর চাকরিজীবন শুরু হয়। মাস্টার্স পরীক্ষার রেজাল্ট তখনও বের হয়নি। মূলত: পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মতিন চৌধুরীর আগ্রহের কারণে তিনি এই চাকরিতে যোগদান করেন।
জনাব শমশের আলী ১৯৬০ সালে কলোমোপ্লান স্কলারশিপ এবং একই সালে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ অর্জন করেন। কমনওয়েলথ স্কলারশিপ ছিল তাঁর একটা বড় অর্জন। এই বাছাই কমিটিতে ছিলেন তাঁর এক প্রিয় শিক্ষক কাজী মোতাহার হোসেন। তাঁরা জনাব আলীকে ইন্টারভিউ নিয়ে কমনওয়েলথ স্কলারশিপের জন্য কমিটিতে নাম পাঠালেন। অল্প বয়সে এই স্কলারশিপ অর্জন ছিল জনাব আলীর জন্য একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। এত অল্প বয়সের কারণে কমনওয়েলথ ড. আলীর পরিবর্তে বিকল্প কাউকে চেয়েছিল, কিন্তু প্রফেসর মোতাহার হোসেন তাকেই একমাত্র প্রার্থী হিসেবে সুপারিশ করেন। অবশেষে শমশের আলী এই স্কলারশিপটি পান এবং কলমোপ্লান স্কলারশিপটি তিনি ছেড়ে দেন। ড. শমশের আলী সেই থেকে জীবনে বহু ল্যাবরোটারীতে কাজ করেছেন। ঘুরেছেন সারা বিশ্বে। পি. এইচ. ডি ডিগ্রী লাভ করার পর ১৯৬৫ সালে দেশে ফিরে এসে তিনি ঢাকায় আনবিক শক্তি কেন্দ্রে সিনিয়র সায়িন্টিফিক অফিসার হিসেবে যোগ দেন। কর্মদক্ষতার জন্য তিনি ১৯৭০ সালে অত্যন্ত অল্প বয়সে আনবিক শক্তি কমিশনের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬১-১৯৮২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২১ বছর যাবৎ ড. আলী আনবিক শক্তি কমিশনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল ছিলেন।
একাডেমিক ফিল্ডে নোবেল বিজয়ী পাকিস্তানের অধিবাসী মরহুম প্রফেসর আব্দুস সালাম এবং এটমিক এনার্জি কমিশনের চেয়ারম্যান ও ইউনাইটেড নেশন’এর সিনিয়র এ্যাডভাইজর মরহুম ড. আই এস ওসমানী জনাব শমশের আলীকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছিলেন। তিনি শমশের আলীকে সায়িন্টিফিক এ্যাডমিনিস্ট্রেশন একেবারে হাতে কলমে শিখিয়েছিলেন। তাঁদের এই সহযোগিতার কারণে ড. শমশের আলী বিরল সম্মাননা অর্জন করেন।
১৯৬১ সালে আব্দুস সালামের পরামর্শে শমশের আলী ম্যানচেস্টারে গিয়েছিলেন। সেখানে সুযোগ হয়েছিল বিখ্যাত নিউক্লিয়ার ফিজিসিস্ট ‘লর্ড ব্রায়ান ফ্লাওয়ারস’ ও ‘স্যার স্যাম এ্যাডওয়ার্ড’-এর কাছে শিক্ষা লাভ করার। এদের সহচার্যে ড. শমশের আলী'র একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড অনেক শক্তিশালি হয়।
পি. এইচ. ডি. ডিগ্রী অর্জন করার পর অত্যন্ত অল্প বয়সেই তিনি ইন্টারন্যাশনাল সেন্ট্রাল ফর থিয়রীটিক্যাল ফিজিক্সের এসোসিয়েট মেম্বার হন। এখনও পর্যন্ত তিনি এর সাথে যুক্ত আছেন অনারারী এসোসিয়েট হিসেবে। আব্দুস সালাম ইন্টারন্যাশনাল সেন্ট্রাল ফর থিওরীটিক্যাল ফিজিক্সের সাথে গত ৪০ বছর যাবৎ যুক্ত থেকে ঐ সেন্টারে তাঁর জীবনের সায়িন্টিফিক ক্যারিয়ার ও পাবলিকেশনসে মূল্যবান ভূমিকা রেখেছেন। আর এর মারফতেই তিনি সারা বিশ্বের সায়িন্টিফিক কমিউনিটির সাথে যুক্ত হয়েছেন।
১৯৭০ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি এটমিক এনার্জি সেন্টারের ডাইরেক্টর ছিলেন। তাঁর একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড এবং রিসার্স কাজের জন্য ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটা স্পেশাল সাইটেশনের মাধ্যমে ড. আলীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারী প্রফেসর অব ফিজিক্স করে তাঁকে একটা বিরল সম্মাননা প্রদান করে। ১৯৮২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৯২-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সাল হতে ২০১০ সাল সময় পর্যন্ত সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও সাইথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য:
আজকের প্রতিষ্ঠিত উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ধারনা দেন ড. শমশের আলী। ১৯৭৬ সালে প্রথম তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের এক অনুষ্ঠানে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর একটা বক্তব্য রেখেছিলেন। অনেকে তাকে পাগল বলতে শুরু করলো। এই উন্মুক্ত শব্দটি মানুষকে বোঝাতে সময় লেগেছিল বেশ কয়েক বছর। সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয় যে সম্পূর্ণ ভিন্ন তা এর গভীরে প্রবেশ না করলে বোঝা যাবে না। অনেক চড়াই উৎরাই পার হয়ে শেষ পর্যন্ত ১৯৯২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আমলে এই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পায় এবং প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ড. শমশের আলী। পাঁচ বছর তিনি এই পদে নিয়োজিত ছিলেন। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে সফলভাগে গড়ে তোলা ছিল তাঁর জীবনের একটা চ্যালেঞ্জিং বিষয়। ১৯৯৬ সালে ড. শমশের আলী ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে তাঁর মেয়াদ শেষ করে চলে আসেন।
ড. শমশের আলী বর্তমানের সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলেন একবারে শুণ্য হতে। তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালীন সময়ে পাশ্চাত্য দেশের অনুকরণে সেখানে যে পদ্ধতি প্রয়োগ করেছিলেন, সেই সিস্টেম সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রয়োগ করেছেন। যখন তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হাল ধরেছিলেন তখন মোট ছাত্রসংখ্যা ছিল ১০৭ জন। মাত্র ৬ বছর সময়ের ব্যাবধানে মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১২ হাজারেরও অধিকে উন্নীত করতে সক্ষম হন। তিনি এক্ষেত্রেও সফলতার দাবীদার।
কোরান ও বিজ্ঞান ভিত্তিক গ্রন্থ রচনা:
১৯৭০ সালের দিকে তিনি কোরআনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। লক্ষ্য করলেন কোরান যা বলে আর আমরা যা করি তার মধ্যে অনেক অমিল রয়েছে। তিনি মনে করেন কোরান এমন একটা অপূর্ব গ্রন্থ যার মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞান চর্চার উৎসাহ, লেখাপড়ার উৎসাহ, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষকে ভাল করার উৎসাহ। এই বিষয়গুলো তাঁকে আকৃষ্ট করায় তিনি ও তাঁর কয়েক সহকর্মী মিলে দীর্ঘ ৫ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিজ্ঞান ও ইসলামের আলোকে গবেষণামূলক একটি বই লেখেন। বইটি “ইসলামী ফাউন্ডেশন”-এর “সায়েন্টিস্ট ইন্ডিকেশন অন দি হলি কোরান” নামে একটি প্রজেক্টের অধীনে ১৯৯০ সালে প্রকাশিত হয়। এটি অনেকটা “মরিস বুক বাইবেল এন্ড সায়েন্স”-এর মত। কিন্তু এটি তাঁর চেয়েও বেশী বিস্তৃত।
ড. আলী সহকর্মীদের নিয়ে আর একটা বই লিখেছেন “মুসলিম কন্ট্রিবিউশন টু সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি”। এখানকার ছেলেমেয়েরা জানেনা মুসলমানদের অগ্রগতি হয়েছিল কেন, তারা ধর্মীয় ইনসপারেশন পেয়ে কিভাবে সায়েন্স এর দিকে অগ্রসর হয়েছিল। ৮০০ বছর ধরে মুসলমান’রা স্পেনে জ্ঞানের যে আলো জ্বেলেছিল তাই সভ্যতার অনেক ক্ষেত্রে একটা ভিত্তিভূমি তৈরী করেছে। আর এটার উপর ভিত্তি করেই বইটি রচনা করেছেন। এর পর আরও বেশ কয়েকটি বই তিনি রচনা করেছেন।
২০০৩ সালে তিনি প্রফেসর কায়কোবাদ ও তানবীর আহমেদের সাথে ম্যাথমেটিক্স (ব্রেইন টুয়িস্টার) নামে একটি বই রচনা করেছেন। তাঁর মতে গনিত প্রকৃতির ভাষা। গনিতের ভিত্তি ভাল না হলে তর্ক করা যায় না। তিনি মনে করেন ম্যাথমেটিক্স একটা লজিক। বইয়ের মধ্যে এসব বিষয় অত্যন্ত সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন ড. এম. শমশের আলী।
আগ্রহের বিষয় :
আগ্রহের বিষয়ের মধ্যে একটি হচ্ছে বিজ্ঞান আর অন্যটি হচ্ছে ধর্ম। ধর্ম বলতে তিনি শুধুমাত্র ইসলামকে নয় সকল ধর্মকে বুঝিয়েছেন। তিনি মনে করেন বিজ্ঞান ও ধর্মের মধ্যে একটা দারুন যোগসূত্র রয়েছে। এর মধ্যে শুধু স্রষ্টাকে উপসনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। মানুষের জন্য, সমাজের জন্য, দেশের জন্য, নিজ ধর্মের মানুষ ও অন্য ধর্মের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। আগ্রহের অন্য বিষয়টি হচ্ছে -
(i) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জনপ্রিয়করণ (তিনি রেডিও ও টেলিভিশনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত প্রায় ৫০০টিরও বেশী বিষয় উপস্থাপন করেন)।
(ii) তৃতীয় বিশ্বের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উন্নয়ন সম্পর্কিত বিষয়াদি।
(iii) বিজ্ঞান ও ধর্মের মধ্যে সামঞ্জস্য।
তিনি বিবিসিতে সাইয়েন্স ও কালচারের উপর বক্তব্য দিয়েছেন।
এছাড়া তিনি বিজ্ঞান ও গনিত বিষয়ে শিক্ষাদানে গভীর আগ্রহ বোধ করেন। তিনি জনগণের মধ্যে বিজ্ঞান জনপ্রিয় করার জন্যে ইটালীর TWNSO (Third World Network of Scientific Organization) কর্তৃক বিশেষ পুরষ্কার লাভ করেন।
গবেষণা:
এতকিছুর পাশাপাশি তিনি বেশকিছু বিষয় নিয়ে গবেষণা করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে -
১) ফিজিক্সে সায়িন্টিফিক গবেষণা
২) ধর্ম নিয়ে গবেষণা
৩) মানুষের উপর গবেষণা
৪) কবিদের মনন নিয়ে গবেষণা
৫) নজরুল ও রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে গবেষণা
৬) আমাদের দেশের উন্নয়ন নিয়ে গবেষণা
৭) মিডিয়াগুলোকে কিভাবে উন্নয়নের দিকে নিয়ে আসা যায় তা নিয়ে গবেষণা।
অর্থাৎ মানুষের জীবনের সকল দিক নিয়েই তিনি ভাবেন। জীবনে শুধু রুটি রুজি রোজগারের জন্য ফিজিক্স নিয়ে তিনি পড়ে থাকেন নি, এর বাইরে অনেক বিষয় নিয়ে তিনি গবেষণা করেছেন। তাঁর মতে সমস্ত বিশ্বকে বুকের মধ্যে স্থান দিতে হবে।
গবেষণামূলক প্রবন্ধ:
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বহু জার্নালে ড. এম. শমশের আলীর অসংখ্য গবেষণামূলক প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে। তিনি সম্মিলিতভাবে নিম্নলিখিত বইগুলি রচনা করেন।
(i) Scientific Indications in the Holy Quran (পবিত্র কোরআনে বিজ্ঞান সম্পর্কিত নির্দেশণা। ইসলামিক ফাউন্ডেশন ঢাকা কর্তৃক ১৯৯০, ১৯৯৫ ও ২০০০ সালে প্রকাশিত)
(ii) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মুসলমানদের অবদান। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা কর্তৃক ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত)
(iii) BRAIN TWISTER (Delightful Mathematics) (২০০২ সালে প্রকাশিত। ISBN 984-32-0319-4)
(iv) Alladin's Real Lamp : Science and Technology, 2011 সালে সূচীপত্র কর্ত্তৃক প্রকাশিত।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক :
আন্তর্জাতিক সম্পর্কটা মূলতঃ দু’ভাবে গড়ে উঠেছে। এর একটি হচ্ছে সায়িন্টিফিক রিসার্চ-এর জন্য। যে কারণে তিনি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিওরিটিক্যাল ফিজিক্স-এর সাথে যুক্ত। অন্যটি হচ্ছে তিনি বাংলাদেশী একাডেমী এন্ড সায়েন্স এর ফেলো ও ২০১২ পর্যন্ত ছিলেন এর প্রেসিডেন্ট। এ কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের একাডেমিক সায়েন্সের সাথে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। তিনি ইন্টার একাডেমিক প্যানেলের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য ছিলেন বহুদিন। তাদের সাথে তিনি জয়েন্ট প্রেগ্রামও করেছেন।
প্রফেসর আলী বাংলা একাডেমী বাংলাদেশ পদার্থ বিজ্ঞান সমিতি, বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমী, জর্ডান ইসলামিক বিজ্ঞান একাডেমি, ইটালীর Trieste এ অবস্থিত Third Academy of Science for the Developing world (TWAS) প্রভৃতি সংগঠনের সম্মানিত Fellow ।
এছাড়াও তিনি ইটালীর Trieste শহরে অবস্থিত Abdus Salam International Centre for Theoretical Physics এর Honorary Associate এবং এই আন্তর্জাতিক সংস্থার জন্মলগ্ন থেকেই গবেষণাকর্মের মাধ্যমে এর সাথে তিনি জড়িত আছেন।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এ দুটি কারণ ছাড়াও আর একটা হচ্ছে ধর্ম ও বিজ্ঞান ভিত্তিক চিন্তা। বিশ্বের যেসব ইসলামী সংস্থা আছে তাদের ডাকে জনাব শমশের আলী সেখানে অংশগ্রহণ করেন।
সম্মাননা:
বিজ্ঞান ও ইসলাম সম্পর্কিত বিষয়ে গবেষণার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন ড. এম শমশের আলীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত করে।
আনবিক শক্তি কমিশনে কর্মরত অবস্থায় ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর শিক্ষাজীবনের সাফল্য ও গবেষণামূলক কর্মে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য তাঁকে Honorary Professor of Physics হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে এক বিরল সম্মাননা প্রদান করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এটি একটি অনন্য ঘটনা।
১৯৭৪ সালে পারমানবিক পদার্থ বিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে হরিপ্রসন্ন রায় স্বর্ণপদক প্রদান করে।
১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমী তাঁকে গবেষণার স্বীকৃতি হিসাবে একাডেমী স্বর্ণপদক প্রদান করেন। এছাড়াও তিনি জগদীশচন্দ্র বসু স্বর্ণপদক, আকরাম খাঁ স্বর্ণপদক, মাদাম তেরেসা স্বর্ণপদক ও ভাসানী স্বর্ণপদক অর্জন করেন।
২০০৫ সালে তিনি খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ স্বর্ণপদক লাভ করেন।
২০০৯ সালে তিনি মালয়েশিয়াতে International University Leadership Colloquies এর পক্ষ থেকে আজীবন সম্মাননা পদক লাভ করেন।
২০০৯ সালে গঠিত International Distance Education Accreditations League (IDEAL) এর অন্যতম পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এই অর্থে তিনি ওয়ার্ল্ড ইনোভেশন ফাউন্ডেশন তার সেরা পুরস্কার হিসেবে ড. শমশের আলীকে অনারারী মেম্বার করেছেন। এর অর্থ একরকম বিশ্বের সায়িন্টফিক বিভিন্ন বডির সাথে যুক্ত হতে পেরেছেন।
তৃতীয় বিশ্বের বিজ্ঞানীদের একটা ফোরাম Third world Academy of Science এর Fellow হয়েছিলেন ১৯৮৯ সালে। এটা ছিল একটা দূর্লভ সম্মাননা।
মিডিয়া ব্যক্তিত্ব :
বিভিন্ন টেলিভিশনে ৫০০-এর অধিক অনুষ্ঠানে ড. শমশের আলী অংশগ্রহণ করেছেন। প্রথমে বাংলাদেশ টেলিভিশনে বিজ্ঞান বিচিত্রা পরে নতুন দিগন্তের মধ্যদিয়ে মিডিয়াতে নিয়মিত অনুষ্ঠান করার সুযোগ পান। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি মানুষকে অত্যনত্ম সহজ সরল ভাষায় বোঝাতে চেষ্টা করতেন যে আগামী দিনের যে বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি তা বিশ্বের চেহারাকে কি করে পাল্টে দেবে ? কি করে জীবনযাত্রাকে পরিবর্তন করবে? এই জনপ্রিয় অনুষ্ঠানটি একটানা দীর্ঘ ১২ বছর চলেছিল বিটিভিতে।
পরবর্তীতে ইসলাম ও বিজ্ঞান নামে আর একটা অনুষ্ঠান করতেন। এখানে তিনি মানুষকে বোঝাতে চেয়েছিলেন যে শুধু ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান দিয়ে হবে না আজকের বিশ্বে বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি যে একটা শক্তি, দেশ গঠনের জন্য হাতিয়ার, সে সম্পর্কে কোরান হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা করতেন।
বিটিভি ছাড়াও এটিএন বাংলা, চ্যানেল আইসহ বিভিন্ন স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলে বহু অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে থাকেন।
বিবাহিত জীবন :
জনাব আলীর বৈবাহিকজীবন শুরু হয় ১৯৬১ সালে ময়মনসিংহের মেয়ে সাকেবা আলীর সাথে। তাঁরা দুই পুত্র সনত্মানের জনক। স্ত্রী সাকেবা আলী Nuclear Physics এর একজন কৃতি ছাত্রী ছিলেন। তিনি Manchester Universit থেকে Nuclear Physics এ Masters করেন। শিক্ষাজীবনে শ্রেষ্ঠ ছাত্রী হিসাবে তিনি Gold Medal পুরষ্কারও পেয়েছেন। বিদেশে শিক্ষাগ্রহণের পর তিনি বাচ্চাদের লেখাপড়ার ব্যাপারে মনোযোগী হন। তিনি মানরাত ইণ্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রিন্সিপাল ছিলেন। বর্তমানে তিনি ম্যারীকুরী স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সীপাল হিসেবে কর্তব্যরত। তাঁর দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে জীশান আলী বর্তমানে কানাডার টরেন্টতে শিক্ষা বিষয়ক কাজ করছেন। ছোট ছেলে জেহান আলী Texas Instruments এ কাজ করতেন, বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের Michigan-এ কর্মরত আছেন।
যশোর জেলার উন্নয়নে গভীরভাবে আগ্রহী:
ড. এম. শমশের আলীর নিজ জেলা যশোরের প্রতি রয়েছে প্রবল ভালবাসা। তিনি যশোরের কোন যোগ্য মানুষ পেলে তাঁকে যথাযথ জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করবার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী তিনি যশোরের লোকদেরকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেবার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন এবং সফল হয়েছেন।
তিনি ইচ্ছা করেন যশোরের ছেলেরা পড়াশোনা করে যেন ভবিষ্যতে বড় কিছু হয়। আর এ জন্যেই যশোরের ছেলেদের সাথে সাক্ষাৎ হলে তিনি তাদেরকে ভালভাবে লেখাপড়া করার পরামর্শ দেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন “যশোরের বহু সংখ্যক ছেলে মেয়ে তাদের নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে থেকে বের হয়ে আসুক এবং উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে দেশের সম্মান বয়ে আনুক। এরা যদি পিছিয়ে থাকে তাহলে যশোরের কোন উন্নয়ন হবে না”।
যশোরে যে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন ছিল এটা তিনি অনেক আগে থেকে অনুভব করতেন। যশোর শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ভৈরব নদীটির বর্তমান অবস্থা দেখে তিনি উদ্বিগ্ন। তিনি মনে করেন খননের মাধ্যমে এটাকে পুনর্জীবিত করা সম্ভব। নদীটি চালু করতে পারলে যশোর তার প্রাণ ফিরে পাবে। তিনি খুব চেষ্টা করছেন নদীটি খননের মাধ্যমে তার প্রাণ ফিরিয়ে আনতে, আর এ জন্যেই তিনি যশোরের জেলা প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ করেছেন।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও সম্পাদনা:
মো: হাসানূজ্জামান (বিপুল)
সর্বশেষ আপডেট :
জুলাইল ২০১২
Dr. M. Shamsher Ali, president of the Bangladesh Academy of Sciences, has been nominated for the Great
Minds of the 21st Century, one of the most popular and sought- after books among the world's greatest library collections of influential and creative minds by the American Biographical Institute (ABI).
Research Board of Advisors of American Biographical Institute, comprising over 14,000 respected leaders all over the world, as well as professionals organizations, civic groups, corporations and personal researchers, submit the nomination, according to the ABI.
Dr. Ali has been referred to the Editorial and Advisory Board of the ABI as a candidate who deserves inclusion in this extraordinary work due to his great mind, it said.
This book will contain the unabbreviated expanded style biographies of fewer than one thousand men and women who have tuned their minds to such an extent that their discipline has been mastered and commended, according to the sources.
Some impotent names who will be included in the book, along
with their biographical details are: Albert Einstein, Professor
Stephen Hawking, Mark Twin, Dr Martin Luther King, Dalai Lama,
Mahatma Gandhi, Mother Teresa, Meya Angelou, Prime Minister
Margaret Thatcher and John F. kenedy, sources said.
Dr. M. Shamsher Ali was born at Bheramara, Kushtia, and
though his ancestral home was in Shingia in Jessore district.
Dr. M. Shamsher Ali obtained his Masters of Science (MSc)
degree in Physics from the University of Dhaka in 1960 and PhD in
Theoretical Nuclear Physics from Manchester University, UK in
1965. Dr. Ali, well known as the Founder Vice-Chancellor (1992-
96) of Bangladesh Open University, had also served as professor
of Physics at the University of Dhaka from 1982 to 2006.
Prior to teaching, he had worked at the Pakistan and
Bangladesh Atomic Energy Commissions for about 21 years in
various important positions including directorship of Atomic
Energy Centre, Dhaka (1970-78). Dr. Ali was elected President of
the Bangladesh Academy of Sciences for the period of 2004-2012.
He is currently the vice- chancellor of Southeast University.
He was awarded the Hari Prasanna Roy Gold Medal in 1974 by
the University of Dhaka for original contribution to Nuclear
Physics, Bangladesh Academy of Sciences Gold Medal in 1985, TWNSO
(Third World Network of Scientific Organizations) Award in 1990
for the promotion of the Public Understanding of Science, the
J.C. Bose Gold Medal, the Mother Teresa Gold Medal and Khan
Bahadur Ahsanullah Gold Medal. Dr Ali recently also obtained
`Life Time Achievement' from Malaysian government for his
outstanding contribution in the field of sciences.
BSS News
Madhu Sudan Mondal

আন্তজার্তিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমানু বিজ্ঞানী ড. এম শমশের আলী (শান্তি) যশোরের কৃতি সন্তান। ১৯৩৭ সালের ২১ নভেম্বর পিতার কর্মস্থল কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারাতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পৈত্রিক সূত্রে তিনি যশোর সদর থানার সিঙ্গিয়া গ্রামের (বসুন্দিয়া) বাসিন্দা। পিতা মরহুম আমীর আলী রেলওয়ের চীফ কর্মাশিয়াল অফিসার ছিলেন। মা রহিমা খাতুন ছিলেন একজন গৃহিণী। পিতা-মাতার ১২ সন্তানের মধ্যে ড. শমশের আলী ৪র্থ এবং ভাইদের মধ্যে তৃতীয়। বড় ভাই, মেজ ভাই ও ফুল ভাই ইন্তেকাল করেছেন। মেজ ভাই ইস্পাহানির ম্যানেজার ছিলেন। অন্যান্য ভাই’রা চাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্য করেন।
বাল্যজীবন:
ড. শমশের আলীর বাল্যজীবন কাটে চুয়াডাঙ্গায়, পশ্চিমবঙ্গের রানাঘাটে ও যশোরে। চুয়াডাঙ্গাতে অবস্থানকালে রেলস্টেশনে উপমহাদেশের কিছু বরেণ্য ব্যক্তিকে দেখার সুযোগ পান। তাদের মধ্যে রয়েছেন মহাত্না গান্ধী, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও অরুনা আশরাফ আলী। তাঁর মনে পড়ে চুয়াডাঙ্গাতে একবার জার্মান ফুটবল টিম এসেছিল। জার্মান টিম এখানে খেলতে আসবে এটা ছিল সেই সময়ের জন্য একটা দারুন আনন্দের বিষয়। রেলস্টেশনের কাছে তখন সার্কাস হওয়ার ঘটনা এখনও তাঁর মন থেকে মুছে যায়নি। যখন সন্ধ্যা হতো তখন তিনি স্টেশনের ব্রীজের উপর পা ঝুলিয়ে বসে থাকতেন আর দেখতেন অনেক দূর হতে মহিষ আখের গাড়ী টেনে নিয়ে আসছে। পড়ন্ত বেলায় সূর্যের লালচে আভার সাথে সেই মহিষের পায়ের ধূলা মিশে যেন এক অপরূপ দৃর্শ্যের সৃষ্টি হতো। এসব স্মৃতি এখনও তাঁর মনে গভীরভাবে দাগ কাটে।
শিক্ষাজীবন:
জনাব শমশের আলীর শিক্ষাজীবন শুরু হয় চুয়াডাঙ্গাতে ইউসুফ মাস্টারের পাঠশালাতে। এখান থেকে মূলত তাঁর গনিতের ভিত্তি তৈরী হয়। ১৯৪৬ সালে চাকুরিজীবি পিতা চুয়াডাঙ্গা হতে বদলী হয়ে সপরিবারে চব্বিশ পরগনার রানাঘাটে চলে যান। সেখানকার বিখ্যাত লালগোপাল স্কুলে তাঁকে ভর্তি করা হয়। দুই বছর সেখানে লেখাপড়া করার পর ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর ১৯৪৮ সালে পিতা সপরিবারে নিজ জেলা যশোরে চলে আসেন। শহরের ষষ্টিতলা পাড়াতে একটি বাসা ভাড়া করে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। ১৯৪৮ সালে যশোর জিলা স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে শমশের আলী’কে ভর্তি করা হয়। ১৯৫৪ সালে এই স্কুল হতে তিনি কৃতিত্বের সাথে ম্যট্রিক পাশ করেন।
জিলা স্কুলে (Jessore Zilla School) পড়াকালীন যাদের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক মরহুম প্রফেসর মোঃ শরীফ হোসেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমান, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও গীতিকার মরহুম ড. মোঃ মনিরুজ্জামান প্রমুখ। স্কুলজীবনে তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি স্কাউটিং-এর মত বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকতেন। ছাত্র হিসেবে জনাব আলী ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। বরাবরই ক্লাসে তিনি প্রথম স্থান অধিকার করতেন। পরীক্ষার খাতায় শিক্ষকেরা একেবারেই লাল কালির দাগ দিতে পারতেন না। এই কারণে তিনি ছিলেন স্কুলের শিক্ষকদের কাছে অত্যন্ত স্নেহভাজন। জীবনে কখনও শিক্ষকের হাতে মার খেতে হয়নি। এখনও তিনি যেসব শিক্ষকের কথা স্মরণ করেন তাদের মধ্যে অন্যতম মরহুম আব্দুর রউফ, আনোয়ার হোসেন, আশরাফ হোসেন প্রমুখ।
ইংরেজির প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল একটু বেশী। বাবার ইচ্ছা ছিল গনিত ও ইংরেজিতে ডবল অনার্স নিয়ে ছেলে জুডিশিয়াল লাইনে যাবে। কিন্তু বাবার কথা তিনি রাখতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ফিজিক্স নিয়ে লেখাপড়া করেন। কিন্তু গনিত ও ইংরেজির উপর তাঁর বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। যশোর জিলা স্কুলে থাকাকালিন এর ভিত্তি তৈরী হয়।
যশোর জিলা স্কুলের পুরাতন আকৃতিটির ভবনটি ভেঙ্গে নতুন ভবন করায় তাঁর মনে এটা পীড়া দেয়। সেই চমৎকার আকৃতিটি তাঁর মনে এখনও গেঁথে আছে। এটা ভেঙ্গে ফেলার সময় যশোরে বসবাসরত প্রাক্তন ছাত্ররা এটাকে কেন যে বাঁধা দিল না তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। তিনি মনে করেন ইঞ্জিনিয়ারকে দিয়ে সেই আকৃতিটি আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব। জিলা স্কুলের এক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ সকল গণ্যমান্য ব্যক্তিকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে তিনি অনুরোধ করেছিলেন।
স্কুলজীবন শেষ করে ১৯৫৪ সালে রাজশাহী কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৬ সালে তিনি এই কলেজ হতে আই. এস. সি. পাশ করেন। যশোর জিলা স্কুলের মত রাজশাহী কলেজও তাঁর স্মৃতিতে গেঁথে আছে। সন্ধ্যা বেলায় পদ্মা নদীর পাড়ে বেঞ্চে বসে পা ঝুলিয়ে বাদাম খাওয়া আর বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারার মধ্যদিয়ে এক মধুর সময় কেটেছে সেখানে। শিক্ষক ছাত্রদের মধ্যে ছিল একটা অন্তরঙ্গ মেলা মেশা যেটা এখন আর দেখা যায় না। পরবর্তীকালে কর্মজীবনে প্রবেশের পর তিনি রাজশাহী কলেজকে বিজ্ঞানের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দিয়ে সাহায্য করেছেন।
১৯৫৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিজিক্সে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সালে তিনি পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে কৃতিত্ত্বের সাথে এখান থেকে অনার্স এবং ১৯৬০ সালে এম. এস. সি ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৬১ সালে যুক্তরাজ্যের Manchester University তে পি. এইচ. ডি করতে যান এবং ১৯৬৫ সালে সেখান থেকে Theoretical Nuclear Physics এ পি. এইচ. ডি ডিগ্রী লাভ করে দেশে ফিরে আসেন। উল্লেখ্য যে, স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সকল পর্যায়ের পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে তিনি অসাধারণ কৃতিত্বের সাথে উর্ত্তীর্ণ হন।
পেশাগত জীবন:
পাকিস্তান আনবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. আই এইচ ওসমানী কর্তৃক ১৯৬১ সালে ড. শমশের আলীকে আনবিক শক্তি কমিশনে সান্টিফিক অফিসার পদে নিয়োগদানের মধ্যদিয়ে তাঁর চাকরিজীবন শুরু হয়। মাস্টার্স পরীক্ষার রেজাল্ট তখনও বের হয়নি। মূলত: পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মতিন চৌধুরীর আগ্রহের কারণে তিনি এই চাকরিতে যোগদান করেন।
জনাব শমশের আলী ১৯৬০ সালে কলোমোপ্লান স্কলারশিপ এবং একই সালে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ অর্জন করেন। কমনওয়েলথ স্কলারশিপ ছিল তাঁর একটা বড় অর্জন। এই বাছাই কমিটিতে ছিলেন তাঁর এক প্রিয় শিক্ষক কাজী মোতাহার হোসেন। তাঁরা জনাব আলীকে ইন্টারভিউ নিয়ে কমনওয়েলথ স্কলারশিপের জন্য কমিটিতে নাম পাঠালেন। অল্প বয়সে এই স্কলারশিপ অর্জন ছিল জনাব আলীর জন্য একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। এত অল্প বয়সের কারণে কমনওয়েলথ ড. আলীর পরিবর্তে বিকল্প কাউকে চেয়েছিল, কিন্তু প্রফেসর মোতাহার হোসেন তাকেই একমাত্র প্রার্থী হিসেবে সুপারিশ করেন। অবশেষে শমশের আলী এই স্কলারশিপটি পান এবং কলমোপ্লান স্কলারশিপটি তিনি ছেড়ে দেন। ড. শমশের আলী সেই থেকে জীবনে বহু ল্যাবরোটারীতে কাজ করেছেন। ঘুরেছেন সারা বিশ্বে। পি. এইচ. ডি ডিগ্রী লাভ করার পর ১৯৬৫ সালে দেশে ফিরে এসে তিনি ঢাকায় আনবিক শক্তি কেন্দ্রে সিনিয়র সায়িন্টিফিক অফিসার হিসেবে যোগ দেন। কর্মদক্ষতার জন্য তিনি ১৯৭০ সালে অত্যন্ত অল্প বয়সে আনবিক শক্তি কমিশনের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬১-১৯৮২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২১ বছর যাবৎ ড. আলী আনবিক শক্তি কমিশনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল ছিলেন।
একাডেমিক ফিল্ডে নোবেল বিজয়ী পাকিস্তানের অধিবাসী মরহুম প্রফেসর আব্দুস সালাম এবং এটমিক এনার্জি কমিশনের চেয়ারম্যান ও ইউনাইটেড নেশন’এর সিনিয়র এ্যাডভাইজর মরহুম ড. আই এস ওসমানী জনাব শমশের আলীকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছিলেন। তিনি শমশের আলীকে সায়িন্টিফিক এ্যাডমিনিস্ট্রেশন একেবারে হাতে কলমে শিখিয়েছিলেন। তাঁদের এই সহযোগিতার কারণে ড. শমশের আলী বিরল সম্মাননা অর্জন করেন।
১৯৬১ সালে আব্দুস সালামের পরামর্শে শমশের আলী ম্যানচেস্টারে গিয়েছিলেন। সেখানে সুযোগ হয়েছিল বিখ্যাত নিউক্লিয়ার ফিজিসিস্ট ‘লর্ড ব্রায়ান ফ্লাওয়ারস’ ও ‘স্যার স্যাম এ্যাডওয়ার্ড’-এর কাছে শিক্ষা লাভ করার। এদের সহচার্যে ড. শমশের আলী'র একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড অনেক শক্তিশালি হয়।
পি. এইচ. ডি. ডিগ্রী অর্জন করার পর অত্যন্ত অল্প বয়সেই তিনি ইন্টারন্যাশনাল সেন্ট্রাল ফর থিয়রীটিক্যাল ফিজিক্সের এসোসিয়েট মেম্বার হন। এখনও পর্যন্ত তিনি এর সাথে যুক্ত আছেন অনারারী এসোসিয়েট হিসেবে। আব্দুস সালাম ইন্টারন্যাশনাল সেন্ট্রাল ফর থিওরীটিক্যাল ফিজিক্সের সাথে গত ৪০ বছর যাবৎ যুক্ত থেকে ঐ সেন্টারে তাঁর জীবনের সায়িন্টিফিক ক্যারিয়ার ও পাবলিকেশনসে মূল্যবান ভূমিকা রেখেছেন। আর এর মারফতেই তিনি সারা বিশ্বের সায়িন্টিফিক কমিউনিটির সাথে যুক্ত হয়েছেন।
১৯৭০ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি এটমিক এনার্জি সেন্টারের ডাইরেক্টর ছিলেন। তাঁর একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড এবং রিসার্স কাজের জন্য ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটা স্পেশাল সাইটেশনের মাধ্যমে ড. আলীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারী প্রফেসর অব ফিজিক্স করে তাঁকে একটা বিরল সম্মাননা প্রদান করে। ১৯৮২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৯২-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সাল হতে ২০১০ সাল সময় পর্যন্ত সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও সাইথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য:
আজকের প্রতিষ্ঠিত উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ধারনা দেন ড. শমশের আলী। ১৯৭৬ সালে প্রথম তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের এক অনুষ্ঠানে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর একটা বক্তব্য রেখেছিলেন। অনেকে তাকে পাগল বলতে শুরু করলো। এই উন্মুক্ত শব্দটি মানুষকে বোঝাতে সময় লেগেছিল বেশ কয়েক বছর। সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয় যে সম্পূর্ণ ভিন্ন তা এর গভীরে প্রবেশ না করলে বোঝা যাবে না। অনেক চড়াই উৎরাই পার হয়ে শেষ পর্যন্ত ১৯৯২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আমলে এই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পায় এবং প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ড. শমশের আলী। পাঁচ বছর তিনি এই পদে নিয়োজিত ছিলেন। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে সফলভাগে গড়ে তোলা ছিল তাঁর জীবনের একটা চ্যালেঞ্জিং বিষয়। ১৯৯৬ সালে ড. শমশের আলী ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে তাঁর মেয়াদ শেষ করে চলে আসেন।
ড. শমশের আলী বর্তমানের সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলেন একবারে শুণ্য হতে। তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালীন সময়ে পাশ্চাত্য দেশের অনুকরণে সেখানে যে পদ্ধতি প্রয়োগ করেছিলেন, সেই সিস্টেম সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রয়োগ করেছেন। যখন তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হাল ধরেছিলেন তখন মোট ছাত্রসংখ্যা ছিল ১০৭ জন। মাত্র ৬ বছর সময়ের ব্যাবধানে মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১২ হাজারেরও অধিকে উন্নীত করতে সক্ষম হন। তিনি এক্ষেত্রেও সফলতার দাবীদার।
কোরান ও বিজ্ঞান ভিত্তিক গ্রন্থ রচনা:
১৯৭০ সালের দিকে তিনি কোরআনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। লক্ষ্য করলেন কোরান যা বলে আর আমরা যা করি তার মধ্যে অনেক অমিল রয়েছে। তিনি মনে করেন কোরান এমন একটা অপূর্ব গ্রন্থ যার মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞান চর্চার উৎসাহ, লেখাপড়ার উৎসাহ, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষকে ভাল করার উৎসাহ। এই বিষয়গুলো তাঁকে আকৃষ্ট করায় তিনি ও তাঁর কয়েক সহকর্মী মিলে দীর্ঘ ৫ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিজ্ঞান ও ইসলামের আলোকে গবেষণামূলক একটি বই লেখেন। বইটি “ইসলামী ফাউন্ডেশন”-এর “সায়েন্টিস্ট ইন্ডিকেশন অন দি হলি কোরান” নামে একটি প্রজেক্টের অধীনে ১৯৯০ সালে প্রকাশিত হয়। এটি অনেকটা “মরিস বুক বাইবেল এন্ড সায়েন্স”-এর মত। কিন্তু এটি তাঁর চেয়েও বেশী বিস্তৃত।
ড. আলী সহকর্মীদের নিয়ে আর একটা বই লিখেছেন “মুসলিম কন্ট্রিবিউশন টু সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি”। এখানকার ছেলেমেয়েরা জানেনা মুসলমানদের অগ্রগতি হয়েছিল কেন, তারা ধর্মীয় ইনসপারেশন পেয়ে কিভাবে সায়েন্স এর দিকে অগ্রসর হয়েছিল। ৮০০ বছর ধরে মুসলমান’রা স্পেনে জ্ঞানের যে আলো জ্বেলেছিল তাই সভ্যতার অনেক ক্ষেত্রে একটা ভিত্তিভূমি তৈরী করেছে। আর এটার উপর ভিত্তি করেই বইটি রচনা করেছেন। এর পর আরও বেশ কয়েকটি বই তিনি রচনা করেছেন।
২০০৩ সালে তিনি প্রফেসর কায়কোবাদ ও তানবীর আহমেদের সাথে ম্যাথমেটিক্স (ব্রেইন টুয়িস্টার) নামে একটি বই রচনা করেছেন। তাঁর মতে গনিত প্রকৃতির ভাষা। গনিতের ভিত্তি ভাল না হলে তর্ক করা যায় না। তিনি মনে করেন ম্যাথমেটিক্স একটা লজিক। বইয়ের মধ্যে এসব বিষয় অত্যন্ত সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন ড. এম. শমশের আলী।
আগ্রহের বিষয় :
আগ্রহের বিষয়ের মধ্যে একটি হচ্ছে বিজ্ঞান আর অন্যটি হচ্ছে ধর্ম। ধর্ম বলতে তিনি শুধুমাত্র ইসলামকে নয় সকল ধর্মকে বুঝিয়েছেন। তিনি মনে করেন বিজ্ঞান ও ধর্মের মধ্যে একটা দারুন যোগসূত্র রয়েছে। এর মধ্যে শুধু স্রষ্টাকে উপসনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। মানুষের জন্য, সমাজের জন্য, দেশের জন্য, নিজ ধর্মের মানুষ ও অন্য ধর্মের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। আগ্রহের অন্য বিষয়টি হচ্ছে -
(i) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জনপ্রিয়করণ (তিনি রেডিও ও টেলিভিশনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত প্রায় ৫০০টিরও বেশী বিষয় উপস্থাপন করেন)।
(ii) তৃতীয় বিশ্বের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উন্নয়ন সম্পর্কিত বিষয়াদি।
(iii) বিজ্ঞান ও ধর্মের মধ্যে সামঞ্জস্য।
তিনি বিবিসিতে সাইয়েন্স ও কালচারের উপর বক্তব্য দিয়েছেন।
এছাড়া তিনি বিজ্ঞান ও গনিত বিষয়ে শিক্ষাদানে গভীর আগ্রহ বোধ করেন। তিনি জনগণের মধ্যে বিজ্ঞান জনপ্রিয় করার জন্যে ইটালীর TWNSO (Third World Network of Scientific Organization) কর্তৃক বিশেষ পুরষ্কার লাভ করেন।
গবেষণা:
এতকিছুর পাশাপাশি তিনি বেশকিছু বিষয় নিয়ে গবেষণা করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে -
১) ফিজিক্সে সায়িন্টিফিক গবেষণা
২) ধর্ম নিয়ে গবেষণা
৩) মানুষের উপর গবেষণা
৪) কবিদের মনন নিয়ে গবেষণা
৫) নজরুল ও রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে গবেষণা
৬) আমাদের দেশের উন্নয়ন নিয়ে গবেষণা
৭) মিডিয়াগুলোকে কিভাবে উন্নয়নের দিকে নিয়ে আসা যায় তা নিয়ে গবেষণা।
অর্থাৎ মানুষের জীবনের সকল দিক নিয়েই তিনি ভাবেন। জীবনে শুধু রুটি রুজি রোজগারের জন্য ফিজিক্স নিয়ে তিনি পড়ে থাকেন নি, এর বাইরে অনেক বিষয় নিয়ে তিনি গবেষণা করেছেন। তাঁর মতে সমস্ত বিশ্বকে বুকের মধ্যে স্থান দিতে হবে।
গবেষণামূলক প্রবন্ধ:
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বহু জার্নালে ড. এম. শমশের আলীর অসংখ্য গবেষণামূলক প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে। তিনি সম্মিলিতভাবে নিম্নলিখিত বইগুলি রচনা করেন।
(i) Scientific Indications in the Holy Quran (পবিত্র কোরআনে বিজ্ঞান সম্পর্কিত নির্দেশণা। ইসলামিক ফাউন্ডেশন ঢাকা কর্তৃক ১৯৯০, ১৯৯৫ ও ২০০০ সালে প্রকাশিত)
(ii) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মুসলমানদের অবদান। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা কর্তৃক ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত)
(iii) BRAIN TWISTER (Delightful Mathematics) (২০০২ সালে প্রকাশিত। ISBN 984-32-0319-4)
(iv) Alladin's Real Lamp : Science and Technology, 2011 সালে সূচীপত্র কর্ত্তৃক প্রকাশিত।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক :
আন্তর্জাতিক সম্পর্কটা মূলতঃ দু’ভাবে গড়ে উঠেছে। এর একটি হচ্ছে সায়িন্টিফিক রিসার্চ-এর জন্য। যে কারণে তিনি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিওরিটিক্যাল ফিজিক্স-এর সাথে যুক্ত। অন্যটি হচ্ছে তিনি বাংলাদেশী একাডেমী এন্ড সায়েন্স এর ফেলো ও ২০১২ পর্যন্ত ছিলেন এর প্রেসিডেন্ট। এ কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের একাডেমিক সায়েন্সের সাথে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। তিনি ইন্টার একাডেমিক প্যানেলের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য ছিলেন বহুদিন। তাদের সাথে তিনি জয়েন্ট প্রেগ্রামও করেছেন।
প্রফেসর আলী বাংলা একাডেমী বাংলাদেশ পদার্থ বিজ্ঞান সমিতি, বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমী, জর্ডান ইসলামিক বিজ্ঞান একাডেমি, ইটালীর Trieste এ অবস্থিত Third Academy of Science for the Developing world (TWAS) প্রভৃতি সংগঠনের সম্মানিত Fellow ।
এছাড়াও তিনি ইটালীর Trieste শহরে অবস্থিত Abdus Salam International Centre for Theoretical Physics এর Honorary Associate এবং এই আন্তর্জাতিক সংস্থার জন্মলগ্ন থেকেই গবেষণাকর্মের মাধ্যমে এর সাথে তিনি জড়িত আছেন।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এ দুটি কারণ ছাড়াও আর একটা হচ্ছে ধর্ম ও বিজ্ঞান ভিত্তিক চিন্তা। বিশ্বের যেসব ইসলামী সংস্থা আছে তাদের ডাকে জনাব শমশের আলী সেখানে অংশগ্রহণ করেন।
সম্মাননা:
বিজ্ঞান ও ইসলাম সম্পর্কিত বিষয়ে গবেষণার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন ড. এম শমশের আলীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত করে।
আনবিক শক্তি কমিশনে কর্মরত অবস্থায় ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর শিক্ষাজীবনের সাফল্য ও গবেষণামূলক কর্মে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য তাঁকে Honorary Professor of Physics হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে এক বিরল সম্মাননা প্রদান করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এটি একটি অনন্য ঘটনা।
১৯৭৪ সালে পারমানবিক পদার্থ বিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে হরিপ্রসন্ন রায় স্বর্ণপদক প্রদান করে।
১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমী তাঁকে গবেষণার স্বীকৃতি হিসাবে একাডেমী স্বর্ণপদক প্রদান করেন। এছাড়াও তিনি জগদীশচন্দ্র বসু স্বর্ণপদক, আকরাম খাঁ স্বর্ণপদক, মাদাম তেরেসা স্বর্ণপদক ও ভাসানী স্বর্ণপদক অর্জন করেন।
২০০৫ সালে তিনি খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ স্বর্ণপদক লাভ করেন।
২০০৯ সালে তিনি মালয়েশিয়াতে International University Leadership Colloquies এর পক্ষ থেকে আজীবন সম্মাননা পদক লাভ করেন।
২০০৯ সালে গঠিত International Distance Education Accreditations League (IDEAL) এর অন্যতম পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এই অর্থে তিনি ওয়ার্ল্ড ইনোভেশন ফাউন্ডেশন তার সেরা পুরস্কার হিসেবে ড. শমশের আলীকে অনারারী মেম্বার করেছেন। এর অর্থ একরকম বিশ্বের সায়িন্টফিক বিভিন্ন বডির সাথে যুক্ত হতে পেরেছেন।
তৃতীয় বিশ্বের বিজ্ঞানীদের একটা ফোরাম Third world Academy of Science এর Fellow হয়েছিলেন ১৯৮৯ সালে। এটা ছিল একটা দূর্লভ সম্মাননা।
মিডিয়া ব্যক্তিত্ব :
বিভিন্ন টেলিভিশনে ৫০০-এর অধিক অনুষ্ঠানে ড. শমশের আলী অংশগ্রহণ করেছেন। প্রথমে বাংলাদেশ টেলিভিশনে বিজ্ঞান বিচিত্রা পরে নতুন দিগন্তের মধ্যদিয়ে মিডিয়াতে নিয়মিত অনুষ্ঠান করার সুযোগ পান। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি মানুষকে অত্যনত্ম সহজ সরল ভাষায় বোঝাতে চেষ্টা করতেন যে আগামী দিনের যে বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি তা বিশ্বের চেহারাকে কি করে পাল্টে দেবে ? কি করে জীবনযাত্রাকে পরিবর্তন করবে? এই জনপ্রিয় অনুষ্ঠানটি একটানা দীর্ঘ ১২ বছর চলেছিল বিটিভিতে।
পরবর্তীতে ইসলাম ও বিজ্ঞান নামে আর একটা অনুষ্ঠান করতেন। এখানে তিনি মানুষকে বোঝাতে চেয়েছিলেন যে শুধু ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান দিয়ে হবে না আজকের বিশ্বে বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি যে একটা শক্তি, দেশ গঠনের জন্য হাতিয়ার, সে সম্পর্কে কোরান হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা করতেন।
বিটিভি ছাড়াও এটিএন বাংলা, চ্যানেল আইসহ বিভিন্ন স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলে বহু অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে থাকেন।
বিবাহিত জীবন :
জনাব আলীর বৈবাহিকজীবন শুরু হয় ১৯৬১ সালে ময়মনসিংহের মেয়ে সাকেবা আলীর সাথে। তাঁরা দুই পুত্র সনত্মানের জনক। স্ত্রী সাকেবা আলী Nuclear Physics এর একজন কৃতি ছাত্রী ছিলেন। তিনি Manchester Universit থেকে Nuclear Physics এ Masters করেন। শিক্ষাজীবনে শ্রেষ্ঠ ছাত্রী হিসাবে তিনি Gold Medal পুরষ্কারও পেয়েছেন। বিদেশে শিক্ষাগ্রহণের পর তিনি বাচ্চাদের লেখাপড়ার ব্যাপারে মনোযোগী হন। তিনি মানরাত ইণ্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রিন্সিপাল ছিলেন। বর্তমানে তিনি ম্যারীকুরী স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সীপাল হিসেবে কর্তব্যরত। তাঁর দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে জীশান আলী বর্তমানে কানাডার টরেন্টতে শিক্ষা বিষয়ক কাজ করছেন। ছোট ছেলে জেহান আলী Texas Instruments এ কাজ করতেন, বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের Michigan-এ কর্মরত আছেন।
যশোর জেলার উন্নয়নে গভীরভাবে আগ্রহী:
ড. এম. শমশের আলীর নিজ জেলা যশোরের প্রতি রয়েছে প্রবল ভালবাসা। তিনি যশোরের কোন যোগ্য মানুষ পেলে তাঁকে যথাযথ জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করবার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী তিনি যশোরের লোকদেরকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেবার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন এবং সফল হয়েছেন।
তিনি ইচ্ছা করেন যশোরের ছেলেরা পড়াশোনা করে যেন ভবিষ্যতে বড় কিছু হয়। আর এ জন্যেই যশোরের ছেলেদের সাথে সাক্ষাৎ হলে তিনি তাদেরকে ভালভাবে লেখাপড়া করার পরামর্শ দেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন “যশোরের বহু সংখ্যক ছেলে মেয়ে তাদের নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে থেকে বের হয়ে আসুক এবং উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে দেশের সম্মান বয়ে আনুক। এরা যদি পিছিয়ে থাকে তাহলে যশোরের কোন উন্নয়ন হবে না”।
যশোরে যে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন ছিল এটা তিনি অনেক আগে থেকে অনুভব করতেন। যশোর শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ভৈরব নদীটির বর্তমান অবস্থা দেখে তিনি উদ্বিগ্ন। তিনি মনে করেন খননের মাধ্যমে এটাকে পুনর্জীবিত করা সম্ভব। নদীটি চালু করতে পারলে যশোর তার প্রাণ ফিরে পাবে। তিনি খুব চেষ্টা করছেন নদীটি খননের মাধ্যমে তার প্রাণ ফিরিয়ে আনতে, আর এ জন্যেই তিনি যশোরের জেলা প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ করেছেন।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও সম্পাদনা:
মো: হাসানূজ্জামান (বিপুল)
সর্বশেষ আপডেট :
জুলাইল ২০১২
Dr. M. Shamsher Ali, president of the Bangladesh Academy of Sciences, has been nominated for the Great
Minds of the 21st Century, one of the most popular and sought- after books among the world's greatest library collections of influential and creative minds by the American Biographical Institute (ABI).
Research Board of Advisors of American Biographical Institute, comprising over 14,000 respected leaders all over the world, as well as professionals organizations, civic groups, corporations and personal researchers, submit the nomination, according to the ABI.
Dr. Ali has been referred to the Editorial and Advisory Board of the ABI as a candidate who deserves inclusion in this extraordinary work due to his great mind, it said.
This book will contain the unabbreviated expanded style biographies of fewer than one thousand men and women who have tuned their minds to such an extent that their discipline has been mastered and commended, according to the sources.
Some impotent names who will be included in the book, along
with their biographical details are: Albert Einstein, Professor
Stephen Hawking, Mark Twin, Dr Martin Luther King, Dalai Lama,
Mahatma Gandhi, Mother Teresa, Meya Angelou, Prime Minister
Margaret Thatcher and John F. kenedy, sources said.
Dr. M. Shamsher Ali was born at Bheramara, Kushtia, and
though his ancestral home was in Shingia in Jessore district.
Dr. M. Shamsher Ali obtained his Masters of Science (MSc)
degree in Physics from the University of Dhaka in 1960 and PhD in
Theoretical Nuclear Physics from Manchester University, UK in
1965. Dr. Ali, well known as the Founder Vice-Chancellor (1992-
96) of Bangladesh Open University, had also served as professor
of Physics at the University of Dhaka from 1982 to 2006.
Prior to teaching, he had worked at the Pakistan and
Bangladesh Atomic Energy Commissions for about 21 years in
various important positions including directorship of Atomic
Energy Centre, Dhaka (1970-78). Dr. Ali was elected President of
the Bangladesh Academy of Sciences for the period of 2004-2012.
He is currently the vice- chancellor of Southeast University.
He was awarded the Hari Prasanna Roy Gold Medal in 1974 by
the University of Dhaka for original contribution to Nuclear
Physics, Bangladesh Academy of Sciences Gold Medal in 1985, TWNSO
(Third World Network of Scientific Organizations) Award in 1990
for the promotion of the Public Understanding of Science, the
J.C. Bose Gold Medal, the Mother Teresa Gold Medal and Khan
Bahadur Ahsanullah Gold Medal. Dr Ali recently also obtained
`Life Time Achievement' from Malaysian government for his
outstanding contribution in the field of sciences.
BSS News
Madhu Sudan Mondal