মোঃ আব্দুল হাই Abdul Hye
Home District: Jhenaidah, Shailkupa নির্বাচনী এলাকার নাম ও নম্বর
৮১ ঝিনাইদহ-১
ঝিনাইদহ জেলা শৈলকূপা উপজেলা নিয়ে গঠিত ঝিনাইদহ-১ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোঃ আব্দুল হাই এর জন্ম ১৯৫২ সালের পহেলা মে শৈলকূপা উপজেলার মহম্মদপুর গ্রামে। পিতার নাম মরহুম ফৈজদ্দিন মোল্লা এবং মাতার নাম মরহুমা ছকিরন নেছা। জনাব আব্দুল হাই বসন্তপুর হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং কেশবচন্দ্র কলেজ, ঝিনাইদহ হতে উচ্চমাধ্যমিক ও বিএ পাস করেন। অষ্টম শ্রেণি হতেই জনাব আব্দুল হাই ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত। এরপর কলেজ জীবনে প্রবেশ করেই তিনি ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সমাসীন হন। পর্যায়ক্রমে তিনি ছাত্রলীগের ঝিনাইদহ মহকুমার সহ-সভাপতি ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়ে ’৬৯ সালে গণ-আন্দোলনে মহকুমার মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি ঝিনাইদহ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি হিসেবে ’৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগে ৩ মার্চ ঝিনাইদহে প্রথম বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে জনাব আব্দুল হাই সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। তিনি ভারতের দেরাদুন থেকে মুজিববাহিনীর ট্রেনিং গ্রহণ শেষে দেশে ফিরে মুজিব বাহিনীর শৈলকূপা থানা লিডার হিসেবে গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালে জনাব আব্দুল হাই ঝিনাইদহ জেলা যুবলীগের সভাপতি এবং যুবলীগ কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭৫ সালে জাতির জনকের নির্মম হত্যায় প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করার জন্য ভারত গমন করেন। দুই বছরে ভারতে অবস্থান শেষে দেশে ফিরে এলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৭৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও কৃষক লীগের সাথে সম্পৃক্ত হন ও এলাকার নেতৃত্ব দেন। এরপর বিভিন্ন ধাপে তিনি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন শেষে ২০০৫ সাল থেকে অদ্যাবধি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। জনসেবাকে পেশা ও নেশা হিসেবে বরণ করে জনাব আব্দুল হাই ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে দীর্ঘ ৪৪/৪৫ বছর বাঙালী জাতীয়তাবাদী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনীতিতে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। এ দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় তিনি আটবার কারাবরণ করেছেন। ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনাব আব্দুল হাই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ঐ সময় তিনি তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় তেইশ হাজার ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দীকে পরাজিত করে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত এবং বেসরকারি বিল সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য। ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর হতে তিনি মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার মহান ব্রত নিয়ে জনাব আব্দুল হাই কাজ করছেন। নতুন প্রজন্মের প্র্রতি তিনি বলেন “আমরা একটা কঠিন রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পরাধীনতার নাগপাশ হতে মুক্ত করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছি। মহান মুক্তি সংগ্রামে আমাদের অসংখ্য বন্ধু, ভাই, বোন প্রাণ দিয়েছেন। ইজ্জত হারিয়েছেন। অনেকের ঘরবাড়ী ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, অনেক ত্যাগ আর কষ্টের ফসল এ স্বাধীনতা। কষ্টার্জিত এ স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাসকে তোমাদের জানতে হবে। সে ইতিহাস জেনে মুক্তিযুদ্ধেও চেতনা অবগত হয়ে সে লক্ষ্যে তোমাদের কাজ করতে হবে। অপর দিকে তোমাদের আরেক যুদ্ধ করতে হবে, সে যুদ্ধ হচ্ছে তোমাদের ভালোভাবে পড়াশুনা করতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর জ্ঞান অর্জন করে নিজেকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে রূপান্তরিত করে নিজ পরিবার ও সমাজের জন্য অবদান রাখতে হবে। এ যুদ্ধই আজ তোমাদের মূল যুদ্ধ। এ যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে দেশগড়ার যোগ্য কারিগর হিসেবে নিজেকে সম্পৃক্ত করো।” জনাব আব্দুল হাই এর সহধর্মিণীর নাম মিসেস সেলিনা পারভীন। এ পরিবারের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে তানভীর আহ্সান জিসান কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ছে। অপর ছেলে তানজির আহ্সান বিভান প্রাথমিকের ছাত্র। কন্যা ফারহানা নাজনীন উর্মি আইনশাস্ত্রে উচ্চতর শ্রেণিতে পড়ছে। জনাব আব্দুল হাই মাননীয় স্পিকারের সাথে ও ব্যক্তিগতভাবে জাপান, ইথিওপিয়া, ভারত, থাইল্যান্ড ও দুবাই সফর করেছেন। ছাত্রজীবনে জনাব হাই একজন বিশিষ্ট ফুটবলার ছিলেন।