
Home রাজনীতিবিদ / Politicians > মজিদ উল হক / Majid-ul-Haq (1926-2013)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 91529 বার পড়া হয়েছে
মজিদ উল হক / Majid-ul-Haq (1926-2013)
মজিদ উল হক
Majid-ul-Haq
Magura
Majid-ul-Haq
Magura

যুদ্ধোত্তর নিয়মিত কোর্সে অংশগ্রহণের পর দেরাদুনের ভারতীয় মিলিটারী একাডেমী থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং কোর এ কমিশানপ্রাপ্ত হন। লেফটেন্যান্ট হিসেবে পাকিস্তানের স্কুল অব মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং এ ইনস্ট্রাকটর নিযুক্ত হন। কোয়েটা স্টাফ কলেজের গ্রাজুয়েট জনাব হক যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্ট লেভেনওয়াতে অত্যন্ত সম্মানিত কম্যান্ড এন্ড জেনারেল স্টাফ কোর্স এ যোগদান করেন। এ ব্যাপারে তিনি ছিলেন প্রথম পাকিস্তানি ইঞ্জিনিয়ার অফিসারদের দলভুক্ত এবং প্রথম বাঙ্গালি অফিসার। তিনি পাকিস্তানের আর্মি ওয়্যার কোর্সের যোগ্যতা অর্জন করেন। সেনাবাহিনীতে থাকাকালে সৈন্য পরিচালনাসহ স্টাফের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন পদে কাজ করেন। পাকিস্তানের খুনজেরাব থেকে গিলগিট পর্যন্ত “পাইলট কাট” প্রকল্পে কারাকোরাম হাইওয়ে ফাস্ট গ্রুপের কমান্ডার ছিলেন। তিনি সময় সময় সিভিল অফিসার হিসেবেও কাজ করেন। এক সময় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাথে যুক্ত ছিলেন।
১৯৭৩ সালে পাকিস্তান থেকে প্রত্যাবর্তনের পর স্টীল কর্পোরেশনের পরে স্টীলসহ রসায়ন ও তেজস করর্পোরেশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এবং একই সাথে স্টীল, সার, রসায়ন ও ভজস করর্পোরেশনের বিশেষ সচিব নিযুক্ত হন। ১৯৭৬ সালের জানুয়ারিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব নিযুক্ত হন। ১৯৭৭ সালে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা পরিষদে রেলওয়ে, সড়ক, জনপদ ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং ৭৮ সালে সংস্থাপন বিভাগের মন্ত্রী নিযুক্ত হন। পরে বিএনপিতে যোগদানের মাধ্যমে সক্রিয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৭৯ সালে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী নিযুক্ত হন। তিনি বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য।
তথ্য সূত্র :
পত্রিকা সংবাদ
সংগ্রহ ও সম্পাদনা :
মো: হাসানূজ্জামান বিপুল
সর্বশেষ আপডেট:
অক্টোবর ২০১১
--------------------------------------------------------------------------------------------
মাগুরা শহরের এমআর রোডে পৈত্রিক বাড়ি। তারও আগে ছিল নড়াইলের বৈখালী গ্রামে। সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর ১৯৭৬ সালে রাজনীতিতে যুক্ত হন। মাগুরা থেকে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ সরকারের সংস্থাপন মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, সেচ ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বপালন করেন। মাগুরা জেলার সঠিক উন্নয়নে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী মজিদ উল হক ১৯২৬ সালে মাগুরায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের একজন কর্মচারি ছিলেন। বাবার চাকরির সুবাদে তিনি দিল্লীর রায়সিংহ বাংলা স্কুলে পড়াশোনা করেন। সেখানকার হিন্দু কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ইংরেজি সাহিত্যে সম্মান ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তিতে তিনি শিবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ডিগ্রি অর্জন করেন। লেখাপড়া শেষে ১৯৪৬ সালে তিনি ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগদান করেন। পরের বছর একজন নিয়মিত কমিশনপ্রাপ্ত অফিসার হিসেবে পাকিস্তান আরমিতে বদলি হন। এখানে ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগদান করেন। এ সময় তিনি পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে কর্মরত ছিলেন। ১৯৬৫ সালে তাকে গিলগিট কারাকোরাম মাউনটেইন হাইওয়ে প্রজেক্টে প্রকৌশলী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ১৯৬৯ সালে তাকে পূর্ব পাকিস্তান আরমির ডেপুটি মারশাল ল’ এডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ৭০ সালের নির্বাচনের পূর্বে পশ্চিম পাকিস্তানের এক সহকর্মীর সাথে মতদ্বৈততার কারণে তাকে রাওয়ালপিন্ডি জেনারেল হেডকোয়ার্টার্সে ফেরত পাঠানো হয়। ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মজিদ উল হক এবং তার পরিবারের সদস্যদের কোহাত ও মান্ডি বাহাউদ্দিন ডিটেনশন ক্যাম্পে নেয়া হয়। ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে এসে তিনি বাংলাদেশ স্টীল করপোরেশনের চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে অত্যন্ত মেধাবি মজিদ উল হক ৭৬ সনে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সাথে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। জিয়াউর রহমান তাকে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন। পরবর্তিতে ১৯৭৯ সালে মাগুরা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর তাকে শিল্প, রেল ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। ১৯৯১ সনের নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে একাধারে তিনি কৃষি, সেচ, পানি সম্পদ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি পারিবারিক দূর্নীতি এবং দলীয় কোন্দলের কারণে ব্যাপক সমালোচিত হন। যার ফল হিসেবে ৯৬ সনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রফেসর ডা. সিরাজুল আকবরের কাছে পরাজিত হন। এই প্রেক্ষাপটে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির অন্যতম নেতা মজিদ উল হক দলের মধ্যে কোনঠাসা হয়ে পড়েন। দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নানা বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ১৯৯৮ সালে তিনি স্বেচ্ছায় দলের স্থায়ী কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। এ সময় দলের মধ্যে তরুণ-প্রবীনের টানাপোড়েনে তিনি ২০০১ সালে দল থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। তারপর থেকেই বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী মজিদ উল হক এতদিন স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন।
মন্ত্রী থাকাকালিন সময়ে তিনি মাগুরার অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখেন। মাগুরা পৌরসভাকে তৃতীয় শ্রেণী থেকে প্রথম শ্রেণীতে উন্নয়ন, শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নবগঙ্গা নদীতে শহর রক্ষা বাঁধ, মাগুরা ও শ্রীপুরের সহজ যোগাযোগের জন্য কুমার নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ, মাগুরা শহরে পরমাণু কৃষি গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠাসহ নানা স্থাপনা তার কৃতিত্বের স্বাক্ষী হয়ে আছে।
মজিদ উল হক বেশকিছু দিন যাবত ফুসফুসের রোগে ভূগছিলেন। গত ১৪ মার্চ তারিখে স্ত্রী জেবুন্নেসার মৃত্যুতে আরো কাতর হয়ে পড়েন। সোমবার সকাল সাড়ে ৪টায় ৮৭ বছর বয়সে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি ২ পুত্র, ১ কন্যা এবং অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
তথ্য সূত্র: অজ্ঞাত
সংগ্রহ: আবু বাসার আখন্দ
সাংবাদিক, মাছরাঙ্গা টিভি, মাগুরা
মোবাইল: ০১৭১৬২৩২৯৬২
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী মজিদ উল হক ১৯২৬ সালে মাগুরায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের একজন কর্মচারি ছিলেন। বাবার চাকরির সুবাদে তিনি দিল্লীর রায়সিংহ বাংলা স্কুলে পড়াশোনা করেন। সেখানকার হিন্দু কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ইংরেজি সাহিত্যে সম্মান ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তিতে তিনি শিবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ডিগ্রি অর্জন করেন। লেখাপড়া শেষে ১৯৪৬ সালে তিনি ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগদান করেন। পরের বছর একজন নিয়মিত কমিশনপ্রাপ্ত অফিসার হিসেবে পাকিস্তান আরমিতে বদলি হন। এখানে ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগদান করেন। এ সময় তিনি পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে কর্মরত ছিলেন। ১৯৬৫ সালে তাকে গিলগিট কারাকোরাম মাউনটেইন হাইওয়ে প্রজেক্টে প্রকৌশলী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ১৯৬৯ সালে তাকে পূর্ব পাকিস্তান আরমির ডেপুটি মারশাল ল’ এডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ৭০ সালের নির্বাচনের পূর্বে পশ্চিম পাকিস্তানের এক সহকর্মীর সাথে মতদ্বৈততার কারণে তাকে রাওয়ালপিন্ডি জেনারেল হেডকোয়ার্টার্সে ফেরত পাঠানো হয়। ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মজিদ উল হক এবং তার পরিবারের সদস্যদের কোহাত ও মান্ডি বাহাউদ্দিন ডিটেনশন ক্যাম্পে নেয়া হয়। ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে এসে তিনি বাংলাদেশ স্টীল করপোরেশনের চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে অত্যন্ত মেধাবি মজিদ উল হক ৭৬ সনে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সাথে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। জিয়াউর রহমান তাকে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন। পরবর্তিতে ১৯৭৯ সালে মাগুরা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর তাকে শিল্প, রেল ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। ১৯৯১ সনের নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে একাধারে তিনি কৃষি, সেচ, পানি সম্পদ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি পারিবারিক দূর্নীতি এবং দলীয় কোন্দলের কারণে ব্যাপক সমালোচিত হন। যার ফল হিসেবে ৯৬ সনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রফেসর ডা. সিরাজুল আকবরের কাছে পরাজিত হন। এই প্রেক্ষাপটে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির অন্যতম নেতা মজিদ উল হক দলের মধ্যে কোনঠাসা হয়ে পড়েন। দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নানা বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ১৯৯৮ সালে তিনি স্বেচ্ছায় দলের স্থায়ী কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। এ সময় দলের মধ্যে তরুণ-প্রবীনের টানাপোড়েনে তিনি ২০০১ সালে দল থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। তারপর থেকেই বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী মজিদ উল হক এতদিন স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন।
মন্ত্রী থাকাকালিন সময়ে তিনি মাগুরার অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখেন। মাগুরা পৌরসভাকে তৃতীয় শ্রেণী থেকে প্রথম শ্রেণীতে উন্নয়ন, শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নবগঙ্গা নদীতে শহর রক্ষা বাঁধ, মাগুরা ও শ্রীপুরের সহজ যোগাযোগের জন্য কুমার নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ, মাগুরা শহরে পরমাণু কৃষি গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠাসহ নানা স্থাপনা তার কৃতিত্বের স্বাক্ষী হয়ে আছে।
মজিদ উল হক বেশকিছু দিন যাবত ফুসফুসের রোগে ভূগছিলেন। গত ১৪ মার্চ তারিখে স্ত্রী জেবুন্নেসার মৃত্যুতে আরো কাতর হয়ে পড়েন। সোমবার সকাল সাড়ে ৪টায় ৮৭ বছর বয়সে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি ২ পুত্র, ১ কন্যা এবং অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
তথ্য সূত্র: অজ্ঞাত
সংগ্রহ: আবু বাসার আখন্দ
সাংবাদিক, মাছরাঙ্গা টিভি, মাগুরা
মোবাইল: ০১৭১৬২৩২৯৬২