
Home নড়াইল জেলা / Narail District > নড়াইল সদর উপজেলার প্রসিদ্ধ জনপদ / The glorious place of Narail Sadar upazila
এই পৃষ্ঠাটি মোট 89493 বার পড়া হয়েছে
নড়াইল সদর উপজেলার প্রসিদ্ধ জনপদ / The glorious place of Narail Sadar upazila
নড়াইল সদর উপজেলার প্রসিদ্ধ জনপদ
The glorious place of Narail Sadar upazila
The glorious place of Narail Sadar upazila
শেখহাটি :
ভৈরব নদীর তীরে অবস্থিত একটি প্রাচীন শহরের পীঠস্থান। বর্তমানে শেখহাটি একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র, একটি ব্যাংক শাখা, উচ্চ বিদ্যালয় পোস্ট অফিস, একটি পুলিশফাঁড়ি, স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ইউনিয়ন পরিষদ অফিস আছে এখানে।
তুলারামপুর :
কাজলা নদীর তীরে এবং নড়াইল যশোর সড়কের পাশে অবস্থিত। একটি প্রসিদ্ধ বাজার, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, ডাকঘর, খাদ্য গুদাম টেলিফোন (পি.সি.ও) অবস্থিত এই গ্রামে।
রামচন্দ্রপুর :
একটি প্রাচীন মুসলিম ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। এই গ্রামের মিয়া পদবীর তালুকদারগণ এক সময়ে খুবই প্রতিপত্তিশালী ছিল। তাদের পাকাবাড়ি এখন জরাজীর্ণ।
জংগলগ্রাম :
একটি প্রাচীন গ্রাম। এই গ্রামে বহু মুসলমানের বাস ছিল। গ্রামে একটি এতিমখানা আছে।
সার্কেল ডাংগা :
নড়াইল কালিয়া সড়কের পাশে অবস্থিত। ঐতিহাসিক দিক দিয়ে গ্রামটি প্রসিদ্ধ। মুঘল আমলে মীর জয়েনউদ্দিন ও ধীরেন্দ্র নাথ সার্কেল নৌ-বাহিনীর কর্মচারীদ্বয় এই এলাকার শাসন কর্মে নিয়োজিত ছিল বলে বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে জানা যায়।
বামনহাটি :
কাজলা নদীর তীরে অবস্থিত। এক সময়ে প্রসিদ্ধ হিন্দু গ্রাম ছিল। এখানে একটি হাইস্কুল আছে।
নাকশি :
এখানে একটি বড় হাট, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, আউড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের দপ্তর এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে। ১৯৯৮ সালে সরকার এখানে ভূমিহীনদের জন্য একটি আশ্রয়কেন্দ্র তৈরী করেছে। সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল কাদের শিকদারের জন্মস্থান।
মির্জাপুর :
একটি প্রসিদ্ধ গ্রাম। এখানে একটি হাইস্কুল, পোস্ট অফিস ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র অবস্থিত। অবিভক্ত বাংলার আইন পরিষদের স্পীকার ও মন্ত্রী প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ মরহুম সৈয়দ নওশের আলী জন্মস্থান। এছাড়া যশোর জেলা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান বঙ্গীয় আইন সভার সদস্য মরহুম ওয়ালিয়ার রহমান ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট খন্দকার হাফিজুর রহমানের গ্রামের বাড়ি।
গোয়াল বাথান :
গোয়াল বাথান একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। সুলতানী আমলে নির্মিত একটি সুদৃশ্য মসজিদ এ গ্রামে অবস্থিত। তিনশত বছরেরও বেশি আগে এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। ১৯৬৪ সালে প্রচন্ড ঘুর্নিঝড়ে মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং পরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খান এই অঞ্চলে পরিদর্শনের সময় মসজিদটির প্রাচীনত্বের কথা শুনে সাথে সাথে অর্থ মঞ্জুরী করেন। উপমহাদেশের প্রখ্যাত চিত্রনায়িকা সন্ধ্যা রায়ের জন্মভূমি। বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, যশোর-৫ আসনে (মনিরামপুর) তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট খান টিপু সুলতানের পৈত্রিক বাড়ী এই গ্রামে।
চাঁদপুর :
নড়াইল উপজেলার উত্তর অঞ্চলের একটি গ্রাম। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন ও কৃষক আন্দোলনের নেতা মরহুম মোদাচ্ছের মুন্সীর জন্মস্থান।
বাকড়ী :
সাহিত্যিক অজয় কুমারের গ্রামের বাড়ী।
কলোড়া :
এই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের মিত্র বংশের লোকেরা বৃটিশ রাজত্বকালে শিক্ষা দীক্ষায় অনেক এগিয়ে গিয়েছিল। উচ্চ পর্যায়ের সরকারী চাকরিতে বেশ সুনাম অর্জন করেছিল। এই বংশের ছেলে শৈমেন মিত্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেসের দীর্ঘদিন সভাপতি ছিলেন। এখনও কংগ্রেসের বিশিষ্ট নেতা।
বাগডাঙ্গা :
হাজী মোজাম খাঁর বাড়ি। অতি দরিদ্র অবস্থা হতে নিজ চেষ্টায় ধনী হয়ে বহু জনহিত কর কাজ করে গেছেন। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আজিজুর রহমানের জন্মস্থান এখানে।
বরাশুলা :
শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত। জেলার প্রসিদ্ধ এতিমখানা, কারিগরী স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদ অবস্থিত এখানে। এক সময়ে এই গ্রামে বহু সুপারি বাগান ছিল। অনেক সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীর জন্মস্থান এই গ্রামে।
বোড়ামারা :
কাজলা নদীর তীরে অবস্থিত। এখানে একটি হাইস্কুল আছে।
সীমানন্দপুর :
এই গ্রামটিতে কামেল পীর গরীব শাহের মাজার অবস্থিত। এখানে বেসরকারী এতিমখানা আছে। একটি প্রাচীন মুসলিম ঐতিহ্যবাহী গ্রাম।
শিংগামোলপুর :
চিত্রানদীর তীরে অবস্থিত। এখানে একটি বাজার, হাইস্কুল রয়েছে। এক সময়ে খুলনা মাগুরা নৌপথের একটি স্টীমারঘাট ও লঞ্চঘাট ছিল।
গোবরা :
চিত্রা নদীর তীরে একটি প্রসিদ্ধ বাণিজ্যিক কেন্দ্র। এখানে একটি ব্যাংকের শাখা রয়েছে। এখানকার পাবর্তী বিদ্যাপীট জেলার অন্যতম প্রাচীন উচ্চ বিদ্যালয়। গোবরা হয়ে এখন সড়ক পথে খুলনায় যাতায়াত করা যায়। নব্বই এর দশকের শেষে এখানে একটি কলেজ স্থাপিত হয়েছে। এই গ্রামে আরও একটি উচ্চ বিদ্যালয় আছে। বিশিষ্ট বামপন্থী রাজনীতিবিদ কমরেড বিমল বিশ্বাসের জন্মস্থান এই গোবরা গ্রাম।
দত্তপাড়া :
নড়াইল লোহাগড়া সড়কের পাশে অবস্থিত। এখানে একটি উচ্চ বিদ্যালয়, বাস স্টেশন এবং বরেণ্য চিত্র শিল্পী এস.এম. সুলতানের নামে একটি পাঠাগার অবস্থিত।
বাঁশগ্রাম :
একটি প্রাচীন গ্রাম। এক সময়ে শিক্ষিত হিন্দু সম্প্রদায়ের কায়স্থ বংশের লোকের বাসস্থান ছিল। এখানে একটি বাজার, ব্যাংকের শাখা ও উচ্চ বালক বিদ্যালয় রয়েছে।
কমলাপুর :
নড়াইল শহরের পূর্বে চিত্রানদীর তীরে অবস্থিত। এককালে বহুহিন্দু সম্ভ্রান্ত লোকের বাসস্থান ছিল।
বাগছারামপুর :
নবগংগা নদীর তীরে অবস্থিত একটি ছোট্ট গ্রাম। বৃটিশ রাজত্বকালে এখানে কয়েকটি পাট ক্রয় কেন্দ্র এবং প্রসিদ্ধ পাট ব্যবসা কেন্দ্র ছিল। বিশ্বের উৎকৃষ্ট পাট এই কেন্দ্র থেকে রপ্তানী হতো। বর্তমানে এই পাট ব্যবসা কেন্দ্রের কোন চিহ্ন এখানে নেই।
মাইজপাড়া :
জেলার উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থিত একটি গ্রাম। এখানে একটি বাজার, ব্যাংকের শাখা ও হাই স্কুল রয়েছে। মাগুরা জেলার সাথে সড়ক পথে মাইজপাড়া হয়ে যাতায়াতের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
রূপগঞ্জ :
জেলা সদরের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র। চিত্রা নদীর তীরে অবস্থিত। নড়াইলের অত্যাচারী প্রসিদ্ধ জমিদার রূপনারায়ণ বাবুর নামানুসারে রূপগঞ্জ নামকরণ হয়। জেলার প্রধান সরকারী খাদ্যগুদাম, প্রাচীনতম ভিক্টোরিয়া কলেজ ও হাট-বাজার এখানে অবস্থিত।
ডুমুরতলা :
নড়াইল পৌর এলাকার মধ্যে অবস্থিত। তে-ভাগা আন্দোলনের নেতা মরহুম নূর জালাল সাহেবের গ্রামের বাড়ি।
রতডাঙ্গা :
চীত্রা নদীর তীরে অবস্থিত। এখানে একটি বাজার, হাইস্কুল ও ব্যাংকের শাখা আছে।
পাইকড়া :
একটি ছোট্ট গ্রাম অথচ প্রচুর শিক্ষিত মানুষ। খ্যামিমান গণিতবিদ অবনীভূষন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি এই গ্রামে। টেলিফোন বিভাগের সাবেক উর্ধ্বতন প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামের জন্মস্থান।
মীরাপাড়া :
এখানে এটি ডাকঘর ও হাইস্কুল আছে। এই গ্রামে একটি প্রাচীন জনপদের নিদর্শন পাওয়া গেছে।
ভবানীপুর :
এখানে একটি উচ্চ বিদ্যালয় আছে। বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন শরীফের জন্মস্থান।
মুলিয়া :
কাজলা নদীর তীরে অবস্থিত। এখানে একটি হাইস্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ইউনিয়ন পরিষদ ভবন অবস্থিত। ১৯৭৪ সাল থেকে একটি পৃথক ইউনিয়ন হয়েছে। তে-ভাগা আন্দোলনের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান ১৯৯৭ সালে এখানকার হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ভারত থেকে প্রখ্যাত তে-ভাগা আন্দোলনের নেত্রী ইলামিত্র সহ বহু শীর্ষ পর্যায়ের কৃষক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের নমঃশূদ্র লোকের বাস বেশি।
উজিরপুর :
নড়াইল পৌর এলাকায় অবস্থিত। প্রাচীনকালের রাজা কেশব রায়ের বাড়ির ধ্বংসাবশেষ এই গ্রামে অবস্থিত। গ্রামে একটি হাইস্কুল রয়েছে।
ভদ্রবিলা :
এক সময়ের হিন্দু সম্প্রদায় সমৃদ্ধ একটি গ্রাম। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী পরিমল ঘোষের বাড়ি এখানে। ভারতের বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণম মুখর্জীর স্ত্রী শুভ্রা মুখার্জী'র পৈত্রিক বাড়ী ও জন্মস্থান। ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমিনের জন্মস্থান এই গ্রাম।
বল্লার টোপ :
ভূতপূর্ব কালিগংগা নদীর তীরে একটি ছোট গ্রাম। মরহুম মুন্সী তমিজউদ্দিন নামে একজন ফরাসী লেখক ও জজের বাড়ি এই গ্রামে অবস্থিত। বিখ্যাত ফার্সী মসনব-ই-দারসাত গ্রন্থের প্রনেতা মাওলানা দারসতুল্লাহর জন্মস্থান।
আউড়িয়া :
এক সময়ে হিন্দু সমৃদ্ধ একটি গ্রাম ছিল। এই গ্রামের বহু শিক্ষিত লোক ভারতে বসবাস করছে এবং উচ্চপর্যায়ে আসীন রয়েছে। গ্রামটির সেই সমৃদ্ধি আর নেই।
তথ্য সূত্র :
নড়াইল জেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য
লেখক: মহসিন হোসাইন
প্রকাশকাল: ২০০৭
/
নড়াইল জেলা সমীক্ষা ও স্থাননাম
লেখক: মহসিন হোসাইন
প্রকাশকাল: ২০০১
/
নড়াইল জেলার অতীত ও বর্তমান
লেখক : আকরামুজ্জামান মিলু
সম্পাদনা :
মো: হাসানূজ্জামান বিপুল
সর্বশেষ আপডেট:
আগস্ট ২০১২