
Home শিল্পী / Artist > কাজল / Kajal (1967)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 18090 বার পড়া হয়েছে
কাজল / Kajal (1967)
কাজল
Kajal
পারিবারিক পরিচিতি :
৯০ এক দশকের জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা কাজল লক্ষ লক্ষ মানুষকে তার কৌতুক রস দিয়ে মাতিয়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করে নিয়েছিলেন। এই কৌতুক অভিনেতা ১৯৬৭ সালে নানা বাড়ী যশোর শহরের বেজপাড়াতে জন্মগ্রহণ করেন। পৈত্রিক বাড়ী বৃহত্তর যশোরের ঝিনাইদহ জেলায়। বাবার নাম রাম গোপাল মৌলিক এবং মাতার নাম শ্রীমতি মিনতী রানী মৌলিক। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে কাজল সবার বড়।
শিক্ষাজীবন :
১৯৮৪ সালে ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী হাই স্কুল থেকে কাজল এস, এস, সি পাশ করেন এবং এইচ, এস, সি পাশ করেন ১৯৮৬ সালে যশোর সিটি কলেজ থেকে। ১৯৮৯ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রী লাভ করেন।
ছেলেবেলার কাজল :
ছেটবেলা থেকেই কাজল ছিলেন ভিশন রশিক। তিনি তাঁর হাস্যকর আচরণ ও কথার রস দিয়ে সারাক্ষণ মানুষকে মাতিয়ে রাখতেন। স্কুলের ছাত্র শিক্ষকদের কাছে তিনি ছিলেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। শিক্ষকরা তাকে বলতেন “তুই ঢাকাতে গিয়ে অভিনয় করলে খুব নাম করবি।”
স্কুলের লেখাপড়া শেষ করে কাজল ভর্তি হলেন যশোর সিটি কলেজে। এখানেও তিনি তাঁর স্কুলের অবস্থান ধরে রেখে ছিলেন। প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর কাছে কাজল ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তি। কিন্তু কিছু শিক্ষক কাজলের প্রতি বিরক্ত ছিলেন। কারণ শিক্ষক ক্লাস নিতে গিয়ে প্রায়ই ছাত্র-ছাত্রী শুণ্য ক্লাস পেতেন। ক্লাস টাইমে তারা কাজলের কৌতুক শু
নতো।
কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ছাত্র নেতারা কাজলকে ব্যবহারও করেছেন যথেচ্ছ। কোন বড় অনুষ্ঠানে হয়তো আমন্ত্রিত অতিথি আসতে দেরী করছেন বা যে কোন কারণে অনুষ্ঠান শুরু হতে দেরী হচ্ছে, এই সময় মানুষ কিছুটা অধৈর্য হয়ে যেতেন। এমন সময় প্রয়োজন হতো কাজলকে। কাজল তাঁর মজার মজার কৌতুক দিয়ে মানুষকে ভুলিয়ে রাখতেন। যখন যেখানেই গেছেন মানুষ কে আনন্দ দিয়েছেন তিনি।
কাজল ছোট বেলা থেকে নজরুল সঙ্গীত পাগল ছিলেন। তিনি মনে করেন একজন কমিডিয়ানের মধ্যে অবশ্যই গায়কীভাব থাকতে হবে।
কৌতুক অভিনেতা হিসাবে পরিচিতি :
কাজল এতদিন শুধু একজন রসিক মানুষ হিসাবে পরিচিত পেয়েছেন। কিন্তু এটাই যে তার প্রতিভা তা তিনি খুব একটা অনুভব করেননি। তিনি ভাবেননি যে তিনি একজন কৌতুক অভিনেতা হতে পারেন এবং এই কৌতুক দিয়েই নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।
কাজল তাঁর স্কুলের শিক্ষকদের পরামর্শে ভর্তি হলেন যশোরের মাইকেল সঙ্গীত একাডেমীতে। এখান থেকেই কাজল প্রথম একজন কৌতুক শিল্পী হিসেবে পরিচিতি পান। একদিন বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক ও যশোর মাইকেল একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা প্রণব ঘোষ প্রথম কাজলকে ঢাকায় তার সাথে দেখা করতে বললেন। ঢাকা শহরে কোন আত্মীয় স্বজন বা বন্ধু কাছে কাজলের থাকার কোন সুযোগ ছিল না। তাই তিনি ঢাকা এসে এক হেটেলে উঠেন। সেখানে থেকে তিনি প্রণব ঘোষের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। তাঁর নিজের তৈরী কিছু কৌতুক নিয়ে একটি ক্যাসেট বের করতে প্রণব ঘোষ তাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। মূলত প্রণব ঘোষের মাধ্যমেই কাজল নিজেকে একজন কৌতুক অভিনেতা হিসাবে পরিচিত করতে পেরেছেন।
তার প্রথম ক্যাসেট ‘হ্যায় আবুল’। পরবর্তীতে একের পর এক তার কৌতুকের ক্যাসেট বের হতে থাকে। তার মোট ক্যাসেট সংখ্যা ২৮টি।
কাজলকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছেন প্রণব ঘোষ। এর পর যশোরের হোসেন এন্ড সন্স এর মালিক বাচ্চু। তিনি একজন গীটারিস্টও। তিনি আরও সহযোগিতা পেয়েছেন যশোর ক্যন্টনমেন্টের সাবেক মেজর জেনারেল সাদেকুর রহমান কাছে। তার মাধ্যমে তিনি ক্যান্টনমেন্টে যথেষ্ট পরিচিতি পেয়েছিলেন। তবলা বাদক গৌতম, তার বাবা, মা, মামা, যশোরের বন্ধু বান্ধব এবং যশোরের সাংস্কৃতিক মন্ডলের অনেকেই তাঁকে যথেষ্ট অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। সাবেক কৌতুক অভিনেতা ও বিটিভির জনপ্রিয় ইত্যাদি অনুষ্ঠানের পরিচালক হানিফ সংকেত তাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। হানিফ সংকেত এর মাধ্যমে কাজল দেশের মানুষের কাছে যথেষ্ট পরিচিতি পেয়েছেন।
দেশ ভ্রমণ :
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে কাজল বহু বাঙ্গালীকে হাসিয়েছেন। যেমন : কুয়েত, কাতার, দুবাই, বাহরাইন, লন্ডন, আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া, হংকং, ইটালী, মালেশিয়া ও সুইডেনসহ আরও বেশকিছু দেশ।
চলচ্চিত্রে অভিনয় :
কাজল এ পর্যন্ত প্রায় ২৫টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। তাঁকে প্রথম চলচ্চিত্রে সুযোগ দেন প্রায়ত চিত্র পরিচালক এহতেশামুর রহমান। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘চোখে চোখে’, ‘চাঁদনী রাতে’, ‘টাকার অহঙ্কার’, ‘এক পলকে’, ‘লঙ্কা কান্ড’, ‘রক্তের অধিকার’, ‘হৃদয়ের বাসি’ ইত্যাদি।
জন্মভূমির প্রতি ভালবাসা :
যশোরের প্রতি কাজলের ভালবাসা প্রবল। তিনি সব সময় তাঁর মাতৃভাষায় অর্থাৎ যশোরের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন। কোন চিত্র পরিচালক তাঁকে সিনেমায় অভিনয় করার প্রস্তাব দিলে তিনি আগেই বলে নেন “আমি অভিনয়ে যশোরের আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করবো।”
কাজলের মতে যশোরের মানুষ যথেষ্ট সাংস্কৃতিক মনা এবং তাদের মধ্যে অনেক প্রতিভা আছে, কিন্তু তাদেরকে ব্যবহার করার মত লোকের অভাব আছে। তিনি মনে করেন যশোরে যত প্রতিভাবান লোক আছে বাংলাদেশে আর কোন জেলায় নেই।
কাজলের উপদেশ :
কাজল জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন “আপনারা সবসময় হাসি আনন্দে থাকবেন। কেউ মন খারাপ করে থাকবেন না। মন খারাপ করে থাকলে হার্ট অ্যাটাক্ট করতে পারে। হাসি আনন্দে থাকলে লিভার ভাল থাকে।”
সাক্ষাৎকার গ্রহণে:
মো: হাসানূজ্জামান (বিপুল)
পলাশ কুমার শাউ
সম্পাদনা :
মোঃ হাসানূজ্জামান বিপুল
ইউনুচ
সর্বশেষ আপডেট :
ফেব্রুয়ারী ২১০২ ইং
ইউনুচ আলী
১৯৮৪ সালে ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী হাই স্কুল থেকে কাজল এস, এস, সি পাশ করেন এবং এইচ, এস, সি পাশ করেন ১৯৮৬ সালে যশোর সিটি কলেজ থেকে। ১৯৮৯ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রী লাভ করেন।
ছেলেবেলার কাজল :
ছেটবেলা থেকেই কাজল ছিলেন ভিশন রশিক। তিনি তাঁর হাস্যকর আচরণ ও কথার রস দিয়ে সারাক্ষণ মানুষকে মাতিয়ে রাখতেন। স্কুলের ছাত্র শিক্ষকদের কাছে তিনি ছিলেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। শিক্ষকরা তাকে বলতেন “তুই ঢাকাতে গিয়ে অভিনয় করলে খুব নাম করবি।”
স্কুলের লেখাপড়া শেষ করে কাজল ভর্তি হলেন যশোর সিটি কলেজে। এখানেও তিনি তাঁর স্কুলের অবস্থান ধরে রেখে ছিলেন। প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর কাছে কাজল ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তি। কিন্তু কিছু শিক্ষক কাজলের প্রতি বিরক্ত ছিলেন। কারণ শিক্ষক ক্লাস নিতে গিয়ে প্রায়ই ছাত্র-ছাত্রী শুণ্য ক্লাস পেতেন। ক্লাস টাইমে তারা কাজলের কৌতুক শু

কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ছাত্র নেতারা কাজলকে ব্যবহারও করেছেন যথেচ্ছ। কোন বড় অনুষ্ঠানে হয়তো আমন্ত্রিত অতিথি আসতে দেরী করছেন বা যে কোন কারণে অনুষ্ঠান শুরু হতে দেরী হচ্ছে, এই সময় মানুষ কিছুটা অধৈর্য হয়ে যেতেন। এমন সময় প্রয়োজন হতো কাজলকে। কাজল তাঁর মজার মজার কৌতুক দিয়ে মানুষকে ভুলিয়ে রাখতেন। যখন যেখানেই গেছেন মানুষ কে আনন্দ দিয়েছেন তিনি।
কাজল ছোট বেলা থেকে নজরুল সঙ্গীত পাগল ছিলেন। তিনি মনে করেন একজন কমিডিয়ানের মধ্যে অবশ্যই গায়কীভাব থাকতে হবে।
কৌতুক অভিনেতা হিসাবে পরিচিতি :
কাজল এতদিন শুধু একজন রসিক মানুষ হিসাবে পরিচিত পেয়েছেন। কিন্তু এটাই যে তার প্রতিভা তা তিনি খুব একটা অনুভব করেননি। তিনি ভাবেননি যে তিনি একজন কৌতুক অভিনেতা হতে পারেন এবং এই কৌতুক দিয়েই নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।
কাজল তাঁর স্কুলের শিক্ষকদের পরামর্শে ভর্তি হলেন যশোরের মাইকেল সঙ্গীত একাডেমীতে। এখান থেকেই কাজল প্রথম একজন কৌতুক শিল্পী হিসেবে পরিচিতি পান। একদিন বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক ও যশোর মাইকেল একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা প্রণব ঘোষ প্রথম কাজলকে ঢাকায় তার সাথে দেখা করতে বললেন। ঢাকা শহরে কোন আত্মীয় স্বজন বা বন্ধু কাছে কাজলের থাকার কোন সুযোগ ছিল না। তাই তিনি ঢাকা এসে এক হেটেলে উঠেন। সেখানে থেকে তিনি প্রণব ঘোষের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। তাঁর নিজের তৈরী কিছু কৌতুক নিয়ে একটি ক্যাসেট বের করতে প্রণব ঘোষ তাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। মূলত প্রণব ঘোষের মাধ্যমেই কাজল নিজেকে একজন কৌতুক অভিনেতা হিসাবে পরিচিত করতে পেরেছেন।
তার প্রথম ক্যাসেট ‘হ্যায় আবুল’। পরবর্তীতে একের পর এক তার কৌতুকের ক্যাসেট বের হতে থাকে। তার মোট ক্যাসেট সংখ্যা ২৮টি।
কাজলকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছেন প্রণব ঘোষ। এর পর যশোরের হোসেন এন্ড সন্স এর মালিক বাচ্চু। তিনি একজন গীটারিস্টও। তিনি আরও সহযোগিতা পেয়েছেন যশোর ক্যন্টনমেন্টের সাবেক মেজর জেনারেল সাদেকুর রহমান কাছে। তার মাধ্যমে তিনি ক্যান্টনমেন্টে যথেষ্ট পরিচিতি পেয়েছিলেন। তবলা বাদক গৌতম, তার বাবা, মা, মামা, যশোরের বন্ধু বান্ধব এবং যশোরের সাংস্কৃতিক মন্ডলের অনেকেই তাঁকে যথেষ্ট অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। সাবেক কৌতুক অভিনেতা ও বিটিভির জনপ্রিয় ইত্যাদি অনুষ্ঠানের পরিচালক হানিফ সংকেত তাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। হানিফ সংকেত এর মাধ্যমে কাজল দেশের মানুষের কাছে যথেষ্ট পরিচিতি পেয়েছেন।
দেশ ভ্রমণ :
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে কাজল বহু বাঙ্গালীকে হাসিয়েছেন। যেমন : কুয়েত, কাতার, দুবাই, বাহরাইন, লন্ডন, আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া, হংকং, ইটালী, মালেশিয়া ও সুইডেনসহ আরও বেশকিছু দেশ।
চলচ্চিত্রে অভিনয় :
কাজল এ পর্যন্ত প্রায় ২৫টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। তাঁকে প্রথম চলচ্চিত্রে সুযোগ দেন প্রায়ত চিত্র পরিচালক এহতেশামুর রহমান। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘চোখে চোখে’, ‘চাঁদনী রাতে’, ‘টাকার অহঙ্কার’, ‘এক পলকে’, ‘লঙ্কা কান্ড’, ‘রক্তের অধিকার’, ‘হৃদয়ের বাসি’ ইত্যাদি।
জন্মভূমির প্রতি ভালবাসা :
যশোরের প্রতি কাজলের ভালবাসা প্রবল। তিনি সব সময় তাঁর মাতৃভাষায় অর্থাৎ যশোরের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন। কোন চিত্র পরিচালক তাঁকে সিনেমায় অভিনয় করার প্রস্তাব দিলে তিনি আগেই বলে নেন “আমি অভিনয়ে যশোরের আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করবো।”
কাজলের মতে যশোরের মানুষ যথেষ্ট সাংস্কৃতিক মনা এবং তাদের মধ্যে অনেক প্রতিভা আছে, কিন্তু তাদেরকে ব্যবহার করার মত লোকের অভাব আছে। তিনি মনে করেন যশোরে যত প্রতিভাবান লোক আছে বাংলাদেশে আর কোন জেলায় নেই।
কাজলের উপদেশ :
কাজল জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন “আপনারা সবসময় হাসি আনন্দে থাকবেন। কেউ মন খারাপ করে থাকবেন না। মন খারাপ করে থাকলে হার্ট অ্যাটাক্ট করতে পারে। হাসি আনন্দে থাকলে লিভার ভাল থাকে।”
সাক্ষাৎকার গ্রহণে:
মো: হাসানূজ্জামান (বিপুল)
পলাশ কুমার শাউ
সম্পাদনা :
মোঃ হাসানূজ্জামান বিপুল
ইউনুচ
সর্বশেষ আপডেট :
ফেব্রুয়ারী ২১০২ ইং
ইউনুচ আলী